অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুর গুঞ্জন

প্রকাশিত: ৮:৫২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২১

অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুর গুঞ্জন

ডেস্ক রিপোর্ট ::
এর আগেও তারকাদের নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা তারকার দীর্ঘদিন খোঁজ খবর না পেয়ে ইচ্ছে মতো যে যার মতো করে সংবাদ লিখে দিচ্ছে। অবশ্য এই ধরণের সংবাদ দায়িত্বশীল কোনো গণমাধ্যমে হয় না। সামাজিক মাধ্যমে যে যার মতো করে, কোনো সোর্স উল্লেখ ছাড়াই এমন বিভ্রান্তি ছাড়ানোর ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। সর্বশেষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের নাম।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে নায়ক ফারুকের মৃত্যুর খবর জানিয়ে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে পরলোকগত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাক এর ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে দেয়া একটি পোস্ট। ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, একটি শোক সংবাদ। ঢাকা- ১৭ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক এম.পি, সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। শোকার্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করছি, তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন।

নাহিম রাজ্জাকের এই পোষ্টে কোন সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত হতে অভিনেতা ফারুকের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত নায়ক আলমগীর-এর সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি জানিয়েছেন, এই খবরের কোন ভিত্তি নেই। আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার পর ভাবীর সাথে (নায়ক ফারুকের স্ত্রী) আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আপনার ভাইয়ের অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। এই বিষয়ে নায়ক ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান বলেন, ‘মানুষের মৃত্যু নিয়ে রসিকতা ঠিক নয়। আল্লাহর রহমতে আপনাদের মিয়াভাই এখনো বেঁচে আছেন, ভালো আছেন। আমি জানি না মানুষ মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রতিযোগিতা করে কি আনন্দ পান?

মায়ের মতো গুজব রটনাকারীদের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ। তিনি বলেন, একের পর এক ফোন আসছে। আব্বু নাকি মারা গেছে। আমরা বুঝতে পারছি না কারা যে এসব খবর ছড়ায়! কী লাভ তাদের?’ ‘বাস্তবতা হচ্ছে আব্বুর অবস্থা গত ২৪ ঘণ্টায় অনেক উন্নতি হয়েছি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন তিনি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে যাবেন। তবে একটু সময় লাগবে।’

গত ৫ এপ্রিল জানিয়েছিলেন, ২১ মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেধ হাসপাতালে ভর্তি ফারুক ২৩ মার্চ থেকে সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। কোন সাড়া দিচ্ছেন না। তবে ৭ এপ্রিল থেকে ফারুক সাড়া দিয়েছেন।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান বরেণ্য অভিনেতা ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ অনুভব করছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে নিজের পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। গত ২১ মার্চ তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাই-সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

‘লাঠিয়াল’-এ অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে ‘শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে ‘আজীবন সম্মাননা’ অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।

প্রায় পাঁচ দশক ধরে ঢালিউড মাতিয়েছেন ফারুক। অভিনয় ছাড়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।