আজ শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস

প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২০

আজ শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস

 

বিকাশ দাশ মৌলভীবাজার প্রতিনিধি::

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের ষষ্ঠ দিন আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার ও শত্রুমুক্ত হয়। ৬ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসে ‘শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস’। এই দিনে শ্রীমঙ্গলের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ শ্রীমঙ্গলে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ায়।

তবে এর আগে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে নিহত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে শ্রীমঙ্গল শহর ছেড়ে পালিয়েছিল পাক-হানাদার বাহিনী। তবে এই মুক্তির স্বাদ নিতে গিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে চা বাগান ঘেরা এই জনপদের মানুষকে।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর তৎকালীন সংসদ সদস্য আলতাফুর রহমান, কমান্ডার মানিক চৌধুরৗ ও ফরিদ আহম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গলে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।

২৩ মার্চ শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সামনে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলার রক্তাক্ত পতাকা উত্তোলন করেন তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা।

দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে ৬ ডিসেম্বর শহরের ভানুগাছ সড়ক দিয়ে আবারও পৌরসভা চত্বরে প্রবেশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেখানে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠেন তারা। উপজেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিটি রয়েছে সিন্ধুরখান ইউনিয়নে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সেদিন মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল এ অঞ্চলের নিরীহ চা শ্রমিকরা।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন একপর্যায়ে ৩০ এপ্রিল পাক-হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে গণহত্যা চালায় তাদের ওপর যুদ্ধের ব্যাংকার বানানোর কথা বলে শহর সংলগ্ন ভাড়াউড়া চা বাগানে প্রবেশ করে সেখানে এক সঙ্গে ৫৪ জন চা শ্রমিককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে তাদের ওপর গুলি চালায় পাক-বাহিনী।

ভাড়াউড়া বধ্যভূমি সম্পর্কে উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমুদ রঞ্জন দেব বলেন, এখানে ১৯৭১ সালে ৫৪ জন চা শ্রমিককে একসঙ্গে নিয়ে এসে পাক-হানাদার বাহিনী হত্যা করে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রেখেছিল।

তিনি জানান, এই বধ্যভূমির একটি স্মৃতিফলক আছে। শ্রীমঙ্গলে সকল বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বরাবরে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে।

কুমুদ রঞ্জন দেব আরো বলেন, আজ আমরা শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস পালন করব। উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধারা সকালে শ্রীমঙ্গল বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন বধ্যভূমিতে পুষ্প অর্পণ করব।