আমি শপথ না নিলে বিএনপির এমপিরাও শপথ নিতো না : সংসদে সুলতান মনসুর

প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০১৯

আমি শপথ না নিলে বিএনপির এমপিরাও শপথ নিতো না : সংসদে সুলতান মনসুর

জাতীয় সংসদে আমি শপথ না নিলে বিএনপি থেকে বিজয়ী হওয়া সংসদ সদস্যরাও শপথ নিতো না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ডাকসুর ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এমপি। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসেবেই তিনি শপথ নিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন মনসুর।

রবিবার (২৩জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সুলতান মনসুর এ কথা বলেন।

বাজেট আলোচনার শুরুতে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, দেশে বিদেশে এই সংসদ নিয়ে সন্দেহ আর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিলো, নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিলো। আমি যদি শপথ না নিতাম তাহলে আজ বিএনপির সদস্যরা শপথ নিয়েছেন তারা যে কয়জনই হোক না কেন তারা শপথ নিতো বলে আমার মনে হয় না। বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসেবে আমি শপথ নেওয়ার ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যাকে দেখে আমি রাজনীতি শিখেছিলাম তার আদর্শে অনপ্রাণিত হয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমি এই সংসদে হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম। আজ আমার ওইদিকেই (আওয়ামী লীগ) থাকার কথা ছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। সংসদ নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে ছাত্রলীগের সভাপতি বানিয়েছিলেন, ডাকসুর ভিপি বানিয়েছিলেন। নেত্রীর নির্দেশে পাগলের বেশে বেশে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত এমন কোনো জেলা নেই যে জেলায় আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির জন্য এক বা একাধিকবার যায়নি। এমনকি ৭০ এ বেশি উপজেলায় পাগলের বেশে বেশে বঙ্গবন্ধুর জন্য রাজনীতি করেছি। রাজনীতিতে স্বাধীনতার পরে যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো ২০০৮ সালের পর থেকে সেই প্রক্রিয়ায় আমিও শিকার হয়েছিলাম। এতোদিন রাজনীতির কারাগারে ছিলাম।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, আমি আমার অনূভুতি থেকে মনে করেছিলাম যে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে একত্রে রাজনীতি করি, যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সাহায্য করা যায়। সেই লক্ষ্যেই জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ড. কামাল হোসেনকে সামনে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সাধারণ কর্মী হিসেবে সেদিন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। আমি কিন্তু আওয়ামী লীগ ছাড়িনি, আওয়ামী লীগও কিন্তু আমাকে বহিষ্কার করেনি। আমার বিবেচনায় একটি কুচক্রী মহল প্রধানমন্ত্রীকে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের দিকে ঠেলে দিয়েছে, এটা দুঃখজনক। বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্য দিয়ে অবশ্যই উন্নয়ন হবে। বাজেটে যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় তা যদি জনগণের কাছে না পৌঁছায় তবে বরাদ্দ যদিই দেন তাতে কি হবে। সংসদ নেত্রী বার বার বলেছেন যে ঘুষ খাবে আর যে ঘুষ নেবে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। আজ আমরা শপথ করি প্রধানমন্ত্রীর নীতিকে বাস্তবায়ন করি।

উল্লেখ্য,সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় মৌলভীবাজার ২ কুলাউড়া আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নির্বাচনের পূর্বে ধান শীষের প্রতীক নিয়ে ভোট চাইতে নামেন তখনই তাঁর বক্তব্যে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর অনুসারী দাবি করতেন। এমনকি সংসদেও আওয়ামীলীগের কর্মী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের রাজনীতি বাস্তবায়ন করতে চান। আর জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানের কোন আপোষ নেই। যত দিন বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে যাবেন বলে সাফ জানিয়েছেন।

শরীফ আহমেদ (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি)