আলোচনায় বিএনপি নেতা আশিক চৌধুরী ! হারিছ চৌধুরীর সম্পদ কার হাতে?

প্রকাশিত: ৯:২১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২২

আলোচনায় বিএনপি নেতা আশিক চৌধুরী ! হারিছ চৌধুরীর সম্পদ কার হাতে?

আলোচনায় বিএনপি নেতা আশিক চৌধুরী !
হারিছ চৌধুরীর সম্পদ কার হাতে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী। দেশজুড়ে তার মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।মৃত্যুর ঘটনাটি ‘গুজব’ কি না, সে প্রশ্ন উৎরে এবার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে হারিছ চৌধুরীর অঢেল সম্পদ নিয়ে।

২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর হারিছ চৌধুরীকে রাজনৈতিক সচিব করেন খালেদা জিয়া। ওই সরকারের আমলে ক্ষমতার অন্যতম ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠা হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে হারিছ চৌধুরীর ক্ষমতা ও সম্পদ।

কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর গ্রামে হারিছ চৌধুরীর বাড়ি। বাড়িতে কেউ থাকেন না।’ থাকেন কেবল চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী।

জনশ্রুতি রয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালে হারিছ চৌধুরী এলাকায় নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ গড়ে তোলেন। সেই সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছেন তার চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী।

অভিযোগ রয়েছে, হারিছ চৌধুরী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকাকালে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন আশিক চৌধুরী। ভাইয়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তিনি। তার কারণেই এলাকাতে হারিছ চৌধুরীর যত দুর্নাম! শেষ পর্যন্ত তার মাধ্যমেই ভাই হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর ছড়ানো নিয়ে সর্ব মহলে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।

সর্বমহলে এখন একটাই প্রশ্ন হারিছ চৌধুরীর এত সম্পদ গেল কোথায়? আইনশৃঙ্খলার বাহিনী কেবল হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু হয়েছে কিনা, এর পেছনে ছুঁটছে। তবে তার অঢেল সম্পদ কার হাতে, তা আড়ালেই থেকে গেছে।

সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান দেন, প্রায় সাড়ে ৫ মাস আগে যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন তাঁর চাচাতো ভাই হারিছ চৌধুরী। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়।

তিনি তাঁর ফেসবুক আইডিতে হারিছ চৌধুরী ও তাঁর ছবি সংযুক্ত করে লেখেন, ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। এরপর থেকে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ অনেকে মন্তব্যের ঘরে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আশিক উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্য বলেন, হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন এবং তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।তাঁর দাফন যুক্তরাজ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে হারিছ চৌধুরীর বয়স চলছিল ৭৫ বছর।তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে হুলিয়া জারি করা, যে কারণে পরোয়ানা মুছাতে মৃত্যুর বিষয়টি ছড়ানো হয়েছে কিনা, সে বিষয়টি সামনে রেখে তদন্তে নামে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় হারিছ চৌধুরী নয়, মারা গেছেন মাহমুদুর রহমান।সেই মরদেহের ডিএনএ টেস্ট করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে সচেষ্ট থাকলেও হারিছ চৌধুরীর অঢেল সম্পদ কার হাতে সে বিষয়টিতে এখনো হাত দেওয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ইস্যু নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে সার্বিক বিষয়বস্তু বেরিয়ে আসবে, তার বৈধ-অবৈধ সম্পদ কার হাতে?

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয়। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্টাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর ৭ বছরের কারাদÐ ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায়ও তিনি আসামি ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল