১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
হাওরাঞ্চলের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে নির্মিত হয়েছিল ‘সখিনা বিবি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র’। সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ভৈষারপাড় এলাকায় নির্মিত হওয়া মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রটি তৈরিতে খরচ হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। চিকিৎসক নিয়োগ না হওয়ার কারণে পাঁচ বছর ধরে পড়ে আছে চিকিৎসাকেন্দ্রটি। আর এতে করে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন অত্র এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা সুরমা ইউনিয়নের ভৈষারপাড়, কৃষ্ণনগর, নলুয়া, বেরীগাঁও, বাঘবেড়, বেলাবরহাটী, বালিকান্দি, হালুয়ারগাঁও, রহমতপুর, সৈয়দপুর গ্রামসহ জাহাঙ্গীরনগর ও রঙ্গারচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ভৈষারপাড় এলাকায় ৫০ শতাংশ জমিতে সখিনা বিবি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। পাঁচ বছর আগে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। চিকিৎসক নিয়োগ না থাকায় এখন পর্যন্ত চিকিৎসাকেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হচ্ছে না। এতে করে এই অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছেন না। রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দ্রুত এই মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র চালুর দাবি জানান তারা।
পরিবার পরিকল্পনা অফিস সুত্রে জানা যায়, ‘সখিনা বিবি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের জন্য গত ডিসেম্বর মাসে ১০টি পদ সৃজন করা হয়েছে। এসব পদে দুই জন মেডিক্যাল অফিসার, দুই জন পরিদর্শক, দুই জন আয়া ও পিয়ন রয়েছে। তবে পদগুলো এখনো শূন্য রয়েছে। কোনো নিয়োগ হয়নি। এ পদে লোক নিয়োগ হলে সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিশ্বজিত কৃষ্ণ চক্রবর্তী।
তিনি আরো জানান, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সখিনা বিবি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে অস্থায়ীভাবে সহকারী নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট ও দুই জন আয়া দিয়ে নামে মাত্র চালু করা হয়েছে। দুটি সুরম্য ভবন বিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে রোগীর জন্য সিট রয়েছে ১০টি। এরমধ্যে চালু আছে দুটি। কেবিন নেই। পানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু পাইপ লাইনে সমস্যা। পল্লী বিদ্যুৎ আছে কিন্তু সৌর বিদ্যুৎ অকেজো। মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য পদে লোক নেই বলে জানান কৃষ্ণ চক্রবর্তী। ভৈষারপাড় এলাকার বাসিন্দা হাফেজা খাতুন বলেন, এলাকাবাসীর আশা ছিল, এলাকাতেই স্বাস্থ্যসেবা মিলবে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে না। মানুষের ভোগান্তি কমাতে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালুর করার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাঘমারা এলাকার বাসিন্দা নয়ন আহমদ বলেন, ভৈষারপাড়ের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র চালু হলে সীমান্তের তিনটি ইউনিয়নের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে। রোগ চিকিৎসায় শহরের আসা-যাওয়ার ভোগান্তি কমে আসবে। রোগ হলে ছুটে যেতে হয় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে। আমাদের দাবি, দ্রুত এই সখিনা বিবি মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে চালু করা হোক।’ সুনামগঞ্জ উত্তর সুরমা উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রব বলেন, সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে ভৈষারপাড়। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যেভর্তি স্থানে এলাকাটি। এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খুবই প্রয়োজন। দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রটি চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, ‘আমি এই এলাকার লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনেক চেষ্টা করে মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রটি নির্মাণের ব্যবস্থা করেছি। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চিকিৎসকের অভাবে কেন্দ্রটি চালু করছে না কর্তৃপক্ষ। এটা বড়ই দুঃখজনক। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হলে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় শহরে আসা-যাওয়ার ভোগান্তি কমে আসবে। মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে এখন ১০ সিট রয়েছে। এটা বাড়িয়ে ২০ সিট করার চেষ্টা করছি। তখন রোগীদের থাকতে কোনো সমস্যা হবে না।
সুনামগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, সখিনা বিবি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’র জন্য ১০টি পদ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে নিয়োগ দেয়া হলে দ্রুত সকল সমস্যার সমাধান হবে। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে একজন সহকারী নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে পারব। কেন্দ্রটি দ্রুত উদ্বোধনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমেদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D