কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষার জের: প্রবাসী, স্বাস্থকর্মী সহ বিবাদী পক্ষে পাল্টা মামলা

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২১

কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষার জের: প্রবাসী, স্বাস্থকর্মী সহ বিবাদী পক্ষে পাল্টা মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট :: কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় বাধা দেওয়ায় ওয়ারিছ আলী গংদের আক্রমনের শিকার হয়েছেন প্রতিবন্দী সালাউদ্দিনগং। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় জাউয়াবাজার ইউনিয়নের কৈতক গ্রামে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২০ জুলাই সকাল ৯টায় কবরস্থানে পবিত্রতা বিনষ্টকারীদের বাধা দিলে প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের ৮ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ২৬ জুলাই ছাতক থানায় মামলা দায়ের করেন হাজী মো. আব্দুছ ছোবহানের ছেলে মো. হোসেন আহমদ। মামলা নং ২১।সুনামগঞ্জের ছাতকের কৈতকে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালিয়ে মামলা থেকে বাঁচতে উল্টো মিথ্যা মামলা করেছে হামকারীরা এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কৈতক গ্রামের শালিস ব্যক্তিত্ব সাবেক মোতাওয়াল্লী হাজী আব্দুস সোবহান, বর্তমান মেম্বার সাফিয়া খাতুন, রফিক আলী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নুরুজ্জামান, আব্দুর রহিম, সাবেক মোতাওয়াল্লী ইমান আলী, আইয়ুব আলী, আব্দুর রহমান জানান সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার ইউনিয়নের কৈতক গ্রামের ওয়ারিছ আলী, তার ছেলে সোহেল আহমদ সোহাগ, কাওছার আহমদ, শামছুদ্দিন, সাদক আলী, ইয়াসিন আলী, আব্দুল কুদ্দুছ, জুনেদ, আরকান আলী, আরফান আলী, ইরফান আলী, সুমন, বাবুল, আঙ্গুরগংরা এলাকায় সব সময় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা কিছুদিন পর পরই এলাকার নিরীহ মানুষদের মারধর করে। শান্তিপ্রিয় গ্রামের মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে থাকে এবং বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় তারা ঢুকিয়ে দেয়। তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই তারা হামলা-মামলা করে থাকে।
তারা আরো বলেন, গত ২০ জুলাই সকাল ৯টায় কৈতক গ্রামে কবরস্থানের পবিত্রতা নষ্ট করে গরু-ছাগল চড়ানোর বাধা দেওয়ায় কৈতক গ্রামের ওয়ারিছ আলী, তার ছেলে সোহেল আহমদ সোহাগ, কাওছার আহমদ, শামছুদ্দিন, সাদক আলী, ইয়াসিন আলী, আব্দুল কুদ্দুছ, জুনেদ, আরকান আলী, আরফান আলী, ইরফান আলী, সুমন, বাবুল, আঙ্গুরগংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রতিবন্দী সালাউদ্দিন, রাজনা বেগম, ইয়াহিয়া, জাকারিয়া, আকদ্দুছ আলী, ইমরান আহমদ, মুজিবুর রহমান, তোফায়েল আহমদকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় ২৬ জুলাই ছাতক থানায় মামলা দায়ের করেন হাজী মো. আব্দুছ ছোবহানের ছেলে মো. হোসেন আহমদ। মামলা নং ২১। মামলায় কৈতক গ্রামের ওয়ারিছ আলী, তার ছেলে সোহেল আহমদ সোহাগ, কাওছার আহমদ, শামছুদ্দিন, সাদক আলী, ইয়াসিন আলী, আব্দুল কুদ্দুছ, জুনেদ, আরকান আলী, আরফান আলী, ইরফান আলী, সুমন, বাবুল, আঙ্গুরগংদের আসামী করা হয়।
কৈতক গ্রামের শালিস ব্যক্তিত্ব সাবেক মোতাওয়াল্লী ইমান আলী জানান, ঐ মামলা থেকে বাঁচতে সুচতুর কৈতক গ্রামের মৃত ঠাকুরধন আলীর ছেলে ওয়ারিছ আলী এই এলাকার যারা মারামারির সাথে জড়িত ছিল না তাদেরকে আসামী করে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাহিত করতে ছাতক থানায় পাল্টা একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ২২। এই মিথ্যা মামলার ১নং আসামী করেছে ছাতক কৈতক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থকর্মী মো. আবুল হোসেনকে। এই আবুল হোসেন করোনাকালের শুরু থেকে অত্র এলাকার যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের সিম্পুল সংগ্রহ করতেন। পাশাপাশি তিনি প্রতিদিন করোনা ভ্যাকসিন টিকা দিয়ে জনসাধারণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যখন তিনি কৈতক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনায় আক্রান্তদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং জীবন বাজি রেখে সরকারের নির্দিশে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন। সেই সময় ওয়ারিছ আলী মিথ্যা মামলায় তাকে ১নং আসামী করেছেন। শুধু তাই নয় ওয়ারিছ আলীর দায়েরকৃত মামলায় আসামী করা হয়েছে কৈতক গ্রামের মোহাম্মদ রফিকুর রহমানকে আসামী করা হয়েছে। যিনি বর্তমানে সৌদি আরবে বসবাস করে রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নুরুজ্জামান জানান, ওয়ারিছ আলীর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় মকদ্দুছ আলীর ছেলে এমরান হোসেন (১৬), মো. হোসেন আহমদের ছেলে মো. তারেক আহমদ (১৬) ও আনিছ আহমদের ছেলে জাকারিয়া আহমদ (১৫)-কে মামলার আসামী করা হয়েছে। অথচ তারা সবাই শিশু।
জাউয়া বাজার ইউনিয়নের মেম্বার সাফিয়া খাতুন জানান, সন্ত্রাসী হামলায় রাজনা বেগম আহত হলে আমার ছেলে মাহবুব মিয়া ওসামনী হাসপাতালে মুমুর্ষ রাজনা বেগমকে নিয়ে যায় এবং ভর্তি করে। আমার ছেলে মাহবুব যখন দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল তখন সে মধ্যস্থতা করে। আমি ওয়ারিছ আলীকে জিজ্ঞেস করলে, তিনি আমাকে বলেন, ‘কেন তোমার ছেলে রাজনা বেগমকে ওসমানীতে ভর্তি করলো সেই জন্য আমি তোমার ছেলেকে আসামী করেছি”। তিনি বলেন, আমি ছাতক থানা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, ডিআইজি মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি এই মিথ্যা মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে অত্র এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সোহেল, কাওছার গংদের হাত থেকে শান্তির জনপদ কৈতক গ্রামকে রক্ষা করার অনুরোধ করছি।