কুলাউড়ায় চাচাতো ভাইয়ের হাতে প্রবাসী খুন!

প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১

কুলাউড়ায় চাচাতো ভাইয়ের হাতে প্রবাসী খুন!

মাস খানেক আগে সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছিলেন প্রবাসী আব্দুল শামীম (৫০)। কিন্তু পৈত্রিক ভিটে নিয়ে বিরোধের জেরে মঙ্গলবার দুপুরের চাচাতো ভাইসহ প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ গেলো তার। এমন ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকন্দপুর গ্রামে। শামীম আহমদ ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও নিহত প্রবাসীর স্বজনদের সুত্রে জানা যায়, প্রবাসী আব্দুল শামীম বেশ কয়েকবছর আগে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকন্দপুর গ্রামে নিজের পৈত্রিক ভিটে ছেড়ে পার্শ্ববর্তী কাদিপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে নতুন বাড়ি তৈরী করে স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নিয়ে বসতি গড়েন। তার দুই ভাই পৈত্রিক ভিটায় থাকেন। সেই সুযোগে শামীমের চাচাতো ভাই সুফিয়ান আহমদ তার পৈত্রিক সম্পত্তি অংশ দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছিলেন। এনিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নিহতের চাচা মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে সুফিয়ান ও তার পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়নি।

এদিকে প্রবাসী শামীম দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব ছিলেন। সম্প্রতি মাস খানেক আগে দেশে এসেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তিনি মুকন্দপুর তার পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে দেখেন তার জমির অংশে সুফিয়ান খড়ের স্তুপ করে রেখেছেন। এগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুফিয়ান ও তার পরিবারকে বলেন। এসময় সুফিয়ানসহ পরিবারের লোকজন লাঠি হাতে এসে শামীমের ওপর চড়াও হন। তাদের মারধরে শামীম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় শামীমকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়সহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর সুফিয়ান পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক সুফিয়ানের পরিবারের দুই নারী সদস্যকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এছাড়া সুফিয়ানকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। শামীম আহমদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এনিয়ে বিভিন্ন সময় তিনি ও তার পরিবারের লোকজন আমার ভাইকে হুমকি দিতেন। তার ভয়ে আমার ভাই অন্য ইউনিয়নে বাড়ি বানিয়ে চলে যান। সুফিয়ান আমাদের ভাইয়ের অংশ দখল করে ভোগ করছিলেন। এ নিয়ে ইউপি চেয়াম্যান ও মেম্বাররা বিচার করলেও সুফিয়ান কোনো বিচার মানেননি।

তিনি আজ সুফিয়ানের মারধরে ঘটনাস্থলেই আমার ভাই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আমরা দৌড়ে এসে তাকে বাঁচাতে গেলে তখন তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার স্ত্রী, মেয়ে ও বোন আহত হয়েছেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন ও আহতদের চিকিৎসা দেন।’

এঘটনায় আহতরা হলেন জয়রুন বেগম (৩৫), আব্দুল মান্নানের স্ত্রী মিনা খানম (৩৭) ও মেয়ে জিসি (১৪)।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সুফিয়ানসহ জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ মাঠে রয়েছে। প্রবাসীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে