সিলেট ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:১২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
গরিবকে অবজ্ঞা নয়; সম্মানই ইসলামের শিক্ষা
উম্মে আহমাদ ফারজানা
মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে গরিব-মিসকিন ও অর্থবিত্তহীনকে অবজ্ঞার চোখে দেখা। সমাজের চোখে গরিব মানুষ মর্যাদাহীন। সবার কাছে তারা মূল্যহীন। মানুষের ভালোবাসা থেকে এরা নিদারুণভাবে বঞ্চিত।
অথচ বিশ্বমানবতার নবী মুহাম্মদ (সা.) এই শ্রেণির লোকদের ভালোবাসার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। গরিব ও অসহায় মুসলমানদের অবজ্ঞা-অবহেলা না করতে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি নিজেকে তাদেরই সংসর্গে রাখো, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালককে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহবান করে এবং তুমি পর্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের দিক থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ২৮)
তাদের হিসাব বিন্দুমাত্রও তোমার দায়িত্বে নেই এবং তোমার হিসাবও বিন্দুমাত্র তাদের দায়িত্বে নেই যে তুমি তাদের বিতাড়িত করবে, অন্যথায় তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫২)
উক্ত আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে খাব্বাব (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে আকরা বিন হাবেস আত-তামিমি ও উয়ায়না বিন হিছন আল-ফাজারি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে তাঁকে সুহায়ব, বিলাল, আম্মার, খাব্বাব (রা.) প্রমুখ দরিদ্র অসহায় মুমিনের সঙ্গে বসা দেখে হেয় জ্ঞান করল। অতঃপর তাঁর কাছে এসে একাকী বলল, আমরা চাই যে আপনি আপনার সঙ্গে আমাদের বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন, যাতে আরবরা আমাদের মর্যাদা উপলব্ধি করতে পারে। কেননা আপনার কাছে আরবের প্রতিনিধিদল আসে।
এই ক্রীতদাসদের সঙ্গে আরবরা আমাদের উপবিষ্ট দেখলে আমরা লজ্জাবোধ করি। অতএব, আমরা যখন আপনার নিকটে আসব তখন আপনি এদেরকে আপনার কাছে থেকে উঠিয়ে দেবেন। আর আমরা বিদায় নেওয়ার পর আপনি ইচ্ছা করলে তাদের সঙ্গে বসতে পারেন। রাসুল (সা.) বলেন, আচ্ছা দেখা যাক। তারা বলল, আপনি আমাদের জন্য একটি চুক্তিপত্র লিখে দেন।
বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কাগজ আনালেন এবং আলী (রা.)-কে লেখার জন্য ডাকলেন। আমরা এক পাশে বসা ছিলাম। ইত্যবসরে জিবরিল (আ.) উপরোক্ত আয়াত নিয়ে অবতরণ করলেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১২৭)
জান্নাতের অধিবাসীদের বেশির ভাগ সম্পদহীন
সাধারণত সম্পদশালীদের কমসংখ্যকই আল্লাহভীরু হয়ে থাকে; বরং এদের বেশির ভাগ হয় উদ্ধত, অহংকারী। ধরাকে করে সরাজ্ঞান। আখিরাতে পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, পুলসিরাত ও জান্নাত-জাহান্নাম নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা-চিন্তা নেই। দুনিয়া নিয়েই এরা মহাব্যস্ত। অথচ এই সাধারণ জ্ঞানটুকু তাদের ঠিকই আছে যে দুনিয়া চিরস্থায়ী নয়। যেকোনো সময় এখানে বিদায়ের ঘণ্টা বেজে যাবে। এর পরও আখিরাতের প্রস্তুতি নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ফলে চূড়ান্ত বিচারে তারা হবে চরমভাবে ব্যর্থ। জ্বলন্ত হুতাশনে জীবন্ত পুড়বে যুগ যুগ ধরে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের জান্নাতিদের সম্পর্কে অবহিত করব না? (তারা হলো) প্রত্যেক দুর্বল ব্যক্তি এবং এমন ব্যক্তি, যাকে দুর্বল মনে করা হয়। সে যদি আল্লাহর নামে কসম করে, তাহলে তা তিনি পূর্ণ করে দেন। (তিনি আরো বলেন) আমি কি তোমাদের জাহান্নামিদের সম্পর্কে অবহিত করব না? (তারা হলো) প্রত্যেক রূঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় ও দাম্ভিক ব্যক্তি।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯১৮)
অতএব, কোনো অবস্থায়ই গরিব ও দুর্বল ভেবে কাউকে হেয় ও অবজ্ঞা করা যাবে না এবং তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা যাবে না।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদের বিতাড়িত করবে না, যারা সকাল-বিকাল স্বীয় পালনকর্তার ইবাদত করে তাঁর সন্তুষ্টি কামনায়।
বিডি প্রতিদিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
(পরিচালক)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি