জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অবৈধ মালুর মহালে অভিযান
চুনারুঘাটে ৮টি ড্রেজার মেশিন ও ৪শ ফুট পাইপ ধ্বংস

প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০১৯

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অবৈধ মালুর মহালে অভিযান </span> <br/> চুনারুঘাটে ৮টি ড্রেজার মেশিন ও ৪শ ফুট পাইপ ধ্বংস

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পানছড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাহাড়ি টিলা কেটে অবাধে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বেহাল হয়েছে ওই এলাকার রাস্তাঘাট। শুধু তাই নয়, টিলা কেটে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে আশ্রয়ন এলাকাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ।

পানছড়ি আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত।

বিষয়টি জানার পর শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নুসরাত ফাতিমা ও ওসি শেখ নাজমুল হকসহ একদল পুলিশ মিলে পানছড়ি এলাকায় অভিযান চালান। অভিযানের সময় ৮টি ড্রেজার মেশিন ও ৪শ ফুট পাইপ জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযান টের পেয়ে চিহ্নিত বালু চোরেরা পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, আশ্রয়ণ এলাকার প্রতিটি টিলায় টিলায় ড্রেজার মেশিন স্থাপন করেছে বালু উত্তোলনকারীরা। এই মেশিনের পাইপ টিলার নিচে প্রবেশ করিয়ে রাখা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। পরে একের পর এক ট্রাক্টর বোঝাই করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বালুর স্তুপগুলো। আর এতে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালুখেকো ওই চক্রটি।

সূত্র জানায়, বালু উত্তোলনকারীরা খুবই প্রভাবশালী। তাদের প্রভাবের কাছে এখানকার সবাই দুর্বল। পরিদর্শনকালে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে নাম প্রকাশে ইচ্ছুক কাউকে পাওয়া যায়নি। এর কারণ হচ্ছে, বালুর তথ্য প্রদানকারীর জীবনে নেমে আসতে পারে চরম বিপর্যয়। তাই ভয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে কোনো তথ্য দিতে নারাজ। এখানকার বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয়রা বলেন, ২০০০ সালে প্রায় ৫০ একর জমিতে এই আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি ৫০০ পরিবার নিয়ে যাত্রা করে। টিলায় টিলায় তাদের বসবাস। এরপর থেকে তারা জ্বালানি কাঠ (লাকড়ি) বিক্রি, সবজি চাষ, গাড়ি চালকসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তারা ছাড়াও এ পাহাড়ে আরো বহু পরিবার বসবাস করছে বলেও জানান তারা।

তারা জানান, বালুখেকো চক্রের সদস্যরা এখানকার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে রেখেছে। এগুলো দিয়ে প্রতিদিন টিলা ও টিলার আশপাশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলন করায় অনেক স্থানে টিলা এখন পুকুর হয়ে গেছে। আরো বহু টিলা রয়েছে হুমকিতে।

কাদামাখা রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের সন্তান বলেই এখানে বসবাস করতে হচ্ছে। আর এ রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নুসরাত ফাতিমা জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে তারা কঠোর এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছেন। পানছড়িতে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল