ছাতকে ৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, মেয়র পরিবারের কাছে পাওনা ২১ লাখ টাকা

প্রকাশিত: ৫:০৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২২

ছাতকে ৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, মেয়র পরিবারের কাছে পাওনা ২১ লাখ টাকা
লুটপাটের অভিযোগ,

ছাতকে ৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

শুধুমাত্র মেয়র পরিবারের কাছে পাওনা ২১ লাখ টাকা

ছাতক প্রতি‌নি‌ধি::

প্রায় ৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ছাতক উপজেলা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ এবং উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুন সরদারের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে লুটপাটের অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। প্রতিদিন সকালে কার্যালয়ে হাজিরা দিয়ে তারা বকেয়া আদায়ের জন্য গ্রাম পাড়া মহল্লায় গ্রাহকের কাছে যাচ্ছেন।

পৌর শহরের বকেয়া বিলের দিক থেকে শীর্ষ বিলখেলাপি হয়েছেন পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম চৌধুরীসহ ৬ সহোদর। মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ আদালতের মাধ্যমে একাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহকের কাছে নগদ টাকা আদায় করে এবং একদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের অঙ্গীকার করেন গ্রাহকরা।

২১ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে পৌর মেয়রের ৬ ভাইয়ের কাছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছেন না বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ অফিসের কর্তৃপক্ষ বারবার তাগিদ দিলেও আদায় হচ্ছে না বিদ্যুৎ বিল। র্দীঘদিন ধরে দিই দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছেন তারা। পৌরসভাসহ বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৯ কোটি টাকা বকেয়া থাকার ফলে সরকারের কোষাগারে জমা হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ছাতক পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম চৌধুরীর ৮০ লাখ ৫৪৮ টাকা, মেয়রের ছোট ভাই শামিম চৌধুরীর ৩টি অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬১৩, সেলিম চৌধুরীর ২ লাখ ৩ হাজার ৩৪১, শাহিন চৌধুরীর ১ লাখ ৫ হাজার ৩৯০, জামাল চৌধুরীর দুটি অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৮ ও কামাল চৌধুরীর ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৫ টাকা বকেয়া রয়েছে। এভাবে মেয়র পরিবারের কাছে ২১ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। প্রভাবশালীদের কাছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার ঘটনায় এ নিয়ে জেলায় সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় এলাকার একাধিক বাসিন্ধা জানান, তারা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। লাখ লাখ টাকা বিল হলেও তাদের নামে মামলা হয় না। আমরা সাধারণ জনগণ ১০ হাজার টাকার বিল হলে বিদ্যুৎ অফিস বাড়িতে এসে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করাসহ মামলা করে দিতেন সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুন সরদার ও সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র কালাম চৌধুরী জানান, তাকে অতিরিক্ত বিল দেওয়া হচ্ছে, যা সঠিক নয়-মিটারে সমস্যা রয়েছে। এ কারণেই বিল দেওয়া হচ্ছে না। ২১ লাখ টাকার বিলের বিষয়ে তিনি অবগত নন।

বিক্রয় ও বিপণন বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ছাতকস্থল (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল রাজ্জাক জানান, ৬ জনের মধ্যে দুটি অ্যাকাউন্টে ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি ১৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। যারা টাকা দেবে না তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল