২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২০
সিকৃবি প্রতিনিধি:
শসা বা বাঙ্গির মতো লম্বা ও সবুজ সবজি স্কোয়াশ (ঈঁপঁৎনরঃধ ঢ়বঢ়ড়), বিদেশি এই সবজিটি বাংলাদেশে অপ্রচলিত। স্কোয়াশকে সিলেটের মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে গবেষণা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মোহতাসিম বিল্লাহ সাজিদ এই গবেষণাটি শুরু করেছেন। ‘ফলন ও উৎপাদন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সিলেট অঞ্চলে স্কোয়াশ উদ্ভিদের অভিযোজন ক্ষমতা এবং জেনেটিক ভিন্নতার মূল্যায়ন’ শিরোনামে চলছে এই গবেষণা। অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে স্কোয়াশ একেবারেই নতুন।
স্বল্প জীবনকালের এই সবজি মাত্র ৪০-৪৫ দিনেই ফলন দেয়। একই গাছে আলাদাভাবে নারী ও পুরুষ ফুল ধরার কারণে ফলনের অনন্য ক্ষমতা রয়েছে স্কোয়াশের। মূলত এটি শীতের সবজি। স্কোয়াশ পরিপক্ক হলে স্যুপ ও বেকারিতে ব্যবহৃত হয়, আধপাকা অবস্থায় সবজি হিসেবেও খাওয়া হয়। এর বীজ তেল ও জিংক দিয়ে পরিপূর্ণ। বীজ ভেজে যেমন খাওয়া যায়, গুড়ো করে ময়দা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। উপকারী এ সবজিটির ফুল, কচি কান্ড এমনকি পাতাও খাওয়া যায়। এই শীতে বাংলাদেশের বাজারে যে সকল সবজি পাওয়া যাচ্ছে, তার তুলনায় অনেকগুন পুষ্টিসমৃদ্ধ এই স্কোয়াশ। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৩, ভিটামিন বি-৯, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লৌহসহ নানান খনিজ পদার্থ দিয়ে সমৃদ্ধ এই সবুজ সবজি।
সিলেট অঞ্চলে উপযোগী স্কোয়াশের সঠিক জাতটি চাষের জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও গবেষণা শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাজারে বিদ্যমান জাতসমূহ এবং বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত বেশ কয়েকটি ইনব্রেড জাত নিয়ে এই গবেষনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সিকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর। সেখান থেকে নতুন জাত উদ্ভাবন করা যায় কি না তা নিয়েও চেষ্টা করছেন গবেষক দলটি। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূইয়ার তত্ত্বাবধানে তাঁর এমএস ছাত্র মোহতাসিম বিল্লাহ সাজিদ কৃষি অনুষদ ভবনের ছাদে ও গবেষণা মাঠে নিরলস পরিশ্রম করে এই গবেষণাটি চালিয়ে যাচ্ছেন।
গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ড. এম ছফি উল্লাহ ভূইয়া বলেন, স্কোয়াশ একটি বিদেশি সবজি যা বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য সবজির তুলনায় অধিক ভিটামিন ও পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এবং সালাদ বা রান্না করে খেতে অনেক সুস্বাদু। কিন্তু উপযুক্ত জাতের অভাবে এটি আমাদের দেশে তেমন জনপ্রিয় হচ্ছে না । যদিও ইদানিং কিছু বীজ কোম্পানী অতি উচ্চদামে হাইব্রিড বীজ বিপণন করে থাকে, কিন্তু তা বাংলাদেশের সকল অঞ্চলে চাষাবাদের উপযোগী নয় এবং হাইব্রিড জাত হওয়ায় তা থেকে প্রাপ্ত বীজ পরবর্তীতে ফলন দেয় না। তাই আমাদের এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হলো সিলেট অঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশের সকল অঞ্চলে শীত ও গ্রীষ্মকালে চাষাবাদের উপযোগী এক বা একাধিক উন্নত ও উচ্চফলনশীল ইনব্রেড জাতের স্কোয়াশ উদ্ভাবন করা যাতে কৃষকরা সহজে নিজেরাই বছরের পর বছর বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করে চাষাবাদের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে এবং পুষ্টিচাহিদা পূরণ করতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতে সামান্য মিললেও গ্রীষ্মে সবজি খুব কম পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন স্কোয়াশ চাষে তখন মানুষের পুষ্টির চাহিদা সহজেই মিটতে পারে। যদিও বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষিজমিতে স্কোয়াশের চাষ হয় না বললেই চলে। বাংলাদেশের সবচে বেশি পতিত জমি সিলেট অঞ্চলে। পতিত এই জমিগুলোতে স্কোয়াশের চাষ করলে কৃষক যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবেন, এ অঞ্চলের পুষ্টির চাহিদাও তেমন মিটবে।
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D