২০শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
ডেস্ক রিপোর্ট
কুলাউড়ায় শতাধিক বছরের দখলীয় বসতভিটা থেকে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে উচ্ছেদের পায়তারা চলছে।
পরিবারটির অভিযোগ পাক বাহিনীর সহযোগী একটি পরিবার এই ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ওই মুক্তিযোদ্ধা প্রশ্ন তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করে ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. সিরাজ মিয়া একজন সরকারি ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধা। তার পিতা মরহুম আব্দুর রহিমসহ বংশধরেরা যুগ যুগ ধরে পাবই মৌজার ৪১২১ দাগসহ বিভিন্ন দাগে ৬.২৫ একর ভূমি ভোগদখল ও ব্যবহার করে আসছেন। ১৯৫৬ সালে প্রজা স্বত আইনে জমি জরিপ শুরু হলে জরিপে আসা লোকজন তাদের বাড়িতে থাকার সুবাদে একটি প্রভাবশালী পরিবার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতবাড়িসহ এই জমি তাদের নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। ৬০ ইংরেজির পরচা বের হলে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়ার বাবা উক্ত জমির মালিক ও দখলকার আব্দুর রহিম গং রেকর্ড ফিরে পাওয়ার জন্য এস টি এক্ট এর ১৪৩ ধারার বিধান মতে মৌলভীবাজার দ্বিতীয় মুন্সিফি আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা (মিস কেইস নম্বর-৫৭/১৯৬৯) দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৯৭০ সালে বিজ্ঞ আদালত বাদীর রেকর্ড সংশোধনের আবেদন সঠিক এবং সে আলোকে রেকর্ড সংশোধনের আদেশ দেন।
মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া জানান, উক্ত মামলার রায় হয় দেশের উত্তাল পরিস্থিতিতে। প্রথমে নির্বাচন এবং পরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। আমি বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যাই। এলাকায় রাজাকার আলবদরদের তৎপরতা বেশী থাকায় আমাদের পরিবারের লোকজন নিজেদের মতো পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। দীর্ঘ ৯ মাস পর দেশ স্বাধীন হলে আমরা বাড়িতে ফিরে কুলাউড়া ভূমি অফিসে রায় কার্যকর করতে যাই। মামলায়ার আদেশ দেখে ভুল রেকর্ড কেটে আদালতের নির্দেশ মতো রায়টি কার্যকর করে। ভূমি অফিসের মিস কেইস নম্বর ১৯৪/৭২-৭৩ এর আলোকে রেকর্ড সংশোধন হয়। আমাদেরকে ৪১২১ দাগসহ বিভিন্ন দাগে ৬.২৫ একর জমির পরচা (মৌজা পাবই, জে এল ১২৬ , খতিয়ান -৬৭১) দেওয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া জানান, বিএনপি জামাত সরকারের সময়ে হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়া পাকিস্তানি বাড়ির বদরুল মার্কেট বানানোর জন্য ২/৩ বছর যাবত আমার রাস্তার পাশের ৭ শতাংশ জমি বিক্রির প্রস্তাব দিয়ে আসছে। বিনিময়ে আমি যা চাইবো সে পরিমাণ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমার বসবাসের আর জমি না থাকায় আমি এই প্রস্তাবে রাজি হইনি।
তিনি অভিযোগ করেন, এই দুই মাস ধরে পুলিশ বার বার আমাদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। একদিন আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে পরে ছেড়ে গেছে। এখন আমার ভাই ভাতিজা এমনকি নাবলক শিশু ও ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের বিরুদ্ধেও চুরির মামলা (কুলাউড়া থানার মামলা নম্বর ২৩ তাং ২৩/১১/১৯ ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/৪৪৭/১১৪ দ বি) দেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টি মিলে ২৬ বছর এদেশ শাসন করে। কিন্তু আমাদের কেউ কোন ডিস্টার্ব করেনি। আজ আমার দল এবারও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে সরাসরি যারা পাক বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে তাদের মামলায় আমার পরিবারের ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে। আর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কালো টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, এডিশনাল এসপি আর ওসি সাহেব এসে আমার ভাগের ৭ শতক জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। আমি বুঝিনা আদালতের রায়ে এই দাগে আমার পরিবারের ৬০ শতক জমি। বাটোয়ারা মতে আমি পেয়েছি ৭ শতক। অথচ বাকি জমির কথা কিছু না বলে শুধু আমার ৭ শতাংশ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করাটাই কি আমার অপরাধ?
তিনি এ বিষয়ে দেশের সচেতন নাগরিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D