১৯শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের আওতাধীন ৩৫টি গ্রাম থেকে গত এক বছরে ৭০টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমার কিনতে গিয়ে গ্রাহকদের গুনতে হয়েছে ২২ লাখ টাকা। অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকেও ভর্তুকি দিয়ে হয়েছে ২০ লাখ টাকা। এই চোরচক্রকে আইনের আওতায় আনতে না পারার কারণে দিন দিন চুরি বাড়ছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী ও বিদ্যুৎ অফিস।
জানা যায়, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্তর্ভুক্ত কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের নিয়ন্ত্রণে কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার ২৪০০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের আওতায় রয়েছে প্রায় ৩৫০টি গ্রাম। আর গ্রাহক রয়েছে ৯৫ হাজারের ওপরে। বিভিন্ন গ্রামে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু রাখতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির খুঁটিতে রয়েছে ৫, ১০, ১৫ ও ২৫ কেভি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার। এই ট্রান্সফরমারগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। তামা জাতীয় মূল্যবান কয়েল আর তারের লোভে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় হানা দিচ্ছে ট্রান্সফরমার চোর চক্র। চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই শুধু চুরি হয়েছে ৭টি ট্রান্সফরমার। এভাবেই প্রতিনিয়ত চোরচক্র রাতের আধাঁরে গ্রাম থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া এই দুই উপজেলার ৩৫টি গ্রাম থেকে ৫ কেভি ১১টি, ১০ কেভি ৩৫টি, ১৫ কেভি ২১টি ও ২৫ কেভি ৩টি মোট ৭০টি বৈদ্যুৎতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ৭০টি ট্রান্সফরমার এর মূল্য প্রায় ৪৩ লাখ টাকা।
সমিতির নিয়ম অনুযায়ী চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের অর্ধেক মূল্য গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হয়। এ কারণে গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হয়েছে প্রায় ২২ লাখ টাকা। আর এই টাকা যোগান দিতে গিয়ে গ্রাহকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গ্রাহকদের চাঁদা তুলে নতুন ট্রান্সফরমারের মূল্য পরিশোধ করছে। আর এ টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে কোনও কোনও গ্রাহককে গরু, ছাগল বিক্রি অথবা সুদে টাকা যোগাড় করেছে।
জানা যায়, ৫ কেভি ট্রান্সফরমারের মূল্য ৩৮ হাজার ১৮ টাকা, ১০ কেভির মূল্য ৫৯ হাজার ৭৬০ টাকা, ১৫ কেভির মূল্য ৭২ হাজার ২২৪ টাকা এবং ২৫ কেভি ট্রান্সফরমারের মূল্য ৯৯ হাজার ৫৩১ টাকা। এদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে চুরি রোধে গ্রাহকদের সচেতনতামূলক লিফলেট ও মাইকিং করার পাশাপাশি খুঁটিতে লোহার শিকল, নাট ওয়েল্ডিং দিয়ে ট্রান্সফরমার মোড়ানোর জন্য উদ্ধুদ্ধ করলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। চোরচক্র রড কেটে ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
নিয়মিত ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটছে। পল্লী বিদ্যুৎতের কমলগঞ্জ জোনাল অফিস থেকে ট্রান্সফরমার চুরি হলেও থানায় মামলা দেওয়ার পর তাদের আর কোনও দায় থাকে না। তাদের অভিযোগ পুলিশ ট্রান্সফরমার চোরদেরকে আটক করতে না পারায় চুরি বাড়ছে।
এদিকে ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ভোর রাতে কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কানাইদাসী গ্রাম থেকে ৫ কেভি ও ১০ কেভির ২টি এবং শ্রীপুর গ্রাম থেকে ১০ কেভির ৩টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ওইদিন সকালে গ্রামবাসী দেখে খুঁটির নিচে ট্রান্সফরমারের সরঞ্জাম পড়ে আছে। পরে গ্রামবাসী পল্লী বিদ্যুত সমিতির লোকজনকে খবর দেয়। এখন গ্রামবাসীকে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম ওবায়দুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি চুরির মামলা করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইদানিং ট্রান্সফরমার চুরি বেড়ে গেছে। এর ফলে সমিতি ও গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চোররা যাতে ট্রান্সফরমার চুরি করতে না পারে সেজন্য সমিতির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট বিলিসহ লোহার শিকল ও নাট ওয়েল্ডিং করে ট্রান্সফরমার রক্ষার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ‘বিগত সময় ট্রান্সফরমার চুরির সঙ্গে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। বর্তমানে চুরির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D