২৮শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
করোনা মহামারীর সময়ে চা শিল্পের ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকি নিয়ে বাগানগুলোতে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে বৈশ্বিক এ মহামারীর প্রভাব এড়াতে পাড়েনি দেশের চা শিল্প। করোনার কারণে কমে গেছে চায়ের বিক্রি ও দাম। এ নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন বাগান মালিকপক্ষ। উৎপাদিত চা বিক্রি না হওয়া আর দাম না পাওয়ায় বাগান চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
বাগান মালিকদের সংগঠন চা সংসদ জানান, এবার সিলেট অঞ্চলের বাগানে চা উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমে এসেছে। আর উৎপাদিত চায়ের ৬০ শতাংশ থাকছে অবিক্রীত। দেশের অন্য অঞ্চলের চা বাগানগুলোরও একই অবস্থা। বৈশি^ক করোনা মহামারী বিরুপ প্রভাব ফেলেছে চা শিল্পে ।
চা বাগানের একটি সূত্র জানায়,হবিঞ্জের চুনারুঘাট ও শ্রীমঙ্গলের সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতের নিম্নমানের চা দেশের খোলা বাজারে আসায় দেশীয় চায়ের চাহিদা কমে গেছে। এতে ছোট চা বাগান গুলোর চা বাজারে বিক্রি করতে পারছেনা। তার সাথে আছে কৃষি ব্যাংকের হইপো লোনের বোঝা। চা বিক্রি না হওয়ায় সময়মত লোনের টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছেনা।
বৃহস্পতিবার(২৩ জুলাই) সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলছেন, দেশের বাজারে বছরে প্রায় নয় কোটি কেজি চায়ের চাহিদা রয়েছে। এর বড় অংশ টং দোকান-হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোয় ব্যবহার হয়। গত মার্চ থেকে দীর্ঘদিন টং দোকান-হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ আছে। বর্তমানে সীমিত আকারে খুললেও ব্যবসা কমেছে। অফিস আদালত বন্ধ থাকায় পানীয় পণ্যটির ব্যবহার কমে এসেছে।
শ্রীমঙ্গলের চা নিলাম কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত এ কেন্দ্রে তিনটি নিলাম আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি নিলামে লক্ষাধিক কেজি চা সরবরাহ হলেও তিন নিলাম মিলিয়ে এক লাখ কেজির সামান্য বেশি চা বিক্রি হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি চা ২০০-২৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা কেজি প্রতি ১৬০-১৮০ টাকায় নেমে এসেছে। চট্টগ্রামের নিলাম কেন্দ্রেও চায়ের বেচাকেনা ও দামে একই অবস্থায় রয়েছে। অবিক্রীত চায়ের মজুদ ক্রমেই বাড়ছে।
এম আহমদ টি এন্ড লেন্ড কোম্পানি লি: এর জি এম সৈয়দ মহি উদ্দিন বলেন, আমাদের কোম্পানির আটটি বাগানের চা নিলামে তুললেও ৪৫-৫০ শতাংশ চা অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন নগদ টাকা আসছে না, অপরদিকে গুদাম ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
ট্রান্সকম টি কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক এম আই জিলাম বলেন, উৎপাদিত চা যথাসময়ে বিক্রি না হওয়ায় এ বছর চা বাগানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ থমকে আছে। এভাবে চলতে থাকলে ছোট বাগানগুলো বড় সমস্যায় পড়বে। যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ নিয়েও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বড়লেখার ওহিদাবাদ চা বাগানের ব্যবস্থাপক পার্থ চন্দ্র দে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতে কম দামে চা বিক্রি করায় অনেকে ক্ষেত্রে চায়ের উৎপাদন খরচ উঠছে না। বাগানের শ্রমিক কর্মচারীদেও বেতন দেয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
ফিনলে টি কোম্পানির শ্রীমঙ্গলের একটি চা বাগানের ব্যবস্থাপক আব্দুল জব্বার বলেন, প্রতি নিলামে আমাদের কোম্পানির ৩৫-৪০ শতাংশ চা অবিক্রীত থাকায় চায়ের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট ভ্যালির সভাপতি জিএম শিবলি বলেন, প্রাকৃতিক কারণে এবার চা উৎপাদন কমছে। আর বিক্রি ও দাম কমছে করোনার কারণে। সব মিলিয়ে নানামুখী সংকটে বড় চাপের মুখে রয়েছে দেশের চা শিল্প।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপপরিচালক (পরিকল্পনা) মুনির আহমেদ বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেশের চা শিল্প আমদানি নির্ভরতা কমে রফতানিমুখী হয়ে উঠতে শুরু করেছিল। এবার এই শিল্পটি বড় ধাক্কা খেয়েছে। মহামারী পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় বজায় থাকলে এবং সরকারি সহায়তা না পেলে সংকট আরো বেড়ে যাবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
(পরিচালক)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D