যুবদল নেতা আব্দুল হকের বাড়িতে হামলা : ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর: লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি, বিএনপির নিন্দা

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০১৮

যুবদল নেতা আব্দুল হকের বাড়িতে হামলা : ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর: লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি, বিএনপির নিন্দা

ওসমানীনগর প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)‘র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হক। বর্তমানে সুদূর প্রবাসে অবস্থান করছেন। গতকাল সোমবার বিকেল ৫ ঘটিকার দিকে আব্দুল হকের বাড়িতে হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করা হয়। বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি ওসমানীনগরের নতুন বাজারে।
ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর আশপাশের ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দোকান বন্ধ থাকা অবস্থায় হঠাৎ স্থানীয় আওয়ামী লীগের একদল লোক এসে আব্দুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হক এন্টারপ্রাইজে ভাংচুর শুরু করেন। এসময় তারা তালা ভেঙ্গে দোকানের সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। দোকানের পাশেই বাড়ির অবস্থান হওয়ায় তারা বাড়িতেও হামলা চালায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হকের বয়োবৃদ্ধ বাবা-মা জানান, এই এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হঠাৎ বাড়িতে এসে ছেলেকে না পেয়ে সবকিছু ভাংচুর করে এবং আমার ছেলে দেশে আসলে তাকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দিয়ে যায়। শুধু তাই নয় এর আগেও দেশে থাকাকালীন অবস্থায় একাধিকবার আমাদের ছেলে আব্দুল হকের উপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রাণে হত্যা করার জন্য হামলা করে। হকের বাবা বলেন, আমার ছেলে বিদেশ যাওয়ার পর এই নতুন বাজারে অবস্থিত আমাদের জমিও দখল করে নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা ছৈয়দুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল সোমবার বিকেলের দিকে উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হকের স্বত্তাধিকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হক এন্টারপ্রাইজ ও তার বাড়িতে যৌথভাবে হামলা ও ভাংচুর করা হয়।
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মতাহির আলী জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল শহীদ জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আর এই দলের রাজনীতি করা আব্দুল হক ত্যাগী ও পরিশ্রমী যুবদল নেতা। সে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবীদ। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে এভাবে অতর্কিত হামলা-ভাংচুর কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এভাবে আমরা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যদি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আক্রোশের শিকার বারবার হতে থাকি আমাদের জীবিত থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। থানা কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে আমরা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কোনো সাহায্য ছাড়াই আমাদের ফিরে আসতে হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতেও ভয় পায় পুলিশ। এরকম চলতে থাকলে পরিবার নিয়ে বাঁচা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আব্দুল হকের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই হামলা ও ভাংচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে প্রবাসে অবস্থানকারী আব্দুল হক জানান, প্রথমত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে এই হামলার কারণে দেশে অবস্থান করা আমার বাবা-মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা যখন আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানান আমি নিজেও হতভম্ব হয়ে যাই। দেশে অবস্থানকালীন সময়ে ব্যবসার পাশাপাশি বিএনপি ও যুবদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকাটাই আমার অপরাধ। দেশে থাকাকালীন অবস্থায় এর আগেও একাধিকবার তারা আমার উপর হামলা চালায় প্রাণে মেরে ফেলতে, কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যাই। প্রশাসেনর কাছে সাহায্য চেয়েও তাদের কোনো সহযোগিতা পাইনি। সোমবার এই ঘটনার পর আমার বাবা-মা স্থানীয় পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলে তারা অপারগতা প্রকাশ করে। স্থানীয় পুলিশ আমার বাবা-মাকে বলে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমাদের পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস ছিল। তারা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও লুট করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি এর সঠিক বিচারের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ছৈয়দুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, এটি রাজনৈতিক বিষয়, এখানে আপনার কথা না বলাই ভালো। এই কথা বলেই ফোন রেখে দেন ছৈয়দুল ইসলাম। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।