১০ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:০২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৫
রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানদন্ড
মুফতি মোজ্জাম্মেল হক রাহমানি
রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ইমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রত্যেক মুমিনের অন্তরে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা শুধু তার জানমাল, সন্তান-সন্ততি ও পিতা-মাতার চেয়ে বেশি হওয়াই যথেষ্ট নয়; বরং বিশ্বজগতের চেয়ে বেশি হওয়া জরুরি। তবেই ইমান পরিপূর্ণ হবে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই।
রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানদন্ডতবে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানদন্ড-মাপকাঠি থাকা দরকার। যাতে প্রত্যেকে নিজেদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসাকে মাপকাঠির নিরিখে মূল্যায়ন করতে পারেন এবং ভুল থেকে সংশোধনের দিকে মনোনিবেশ করতে পারেন।
যে কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে পরিচিত, সে এই সত্যটি অতি সহজেই বুঝতে পারে যে, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মাপকাঠি হলো রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত ও সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর আদর্শ। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্রদ্ধা-ভালোবাসার নামে শুধু সেই আমল ও পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে, যা রসুলুল্লাহর সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বনি ইসরাইল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল আমার উম্মতও ঠিক তাদেরই অবস্থায় পতিত হবে। বনি ইসরাইল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল আর আমার উম্মত বিভক্ত হবে ৭৩ দলে। এদের একটি দল ছাড়া সব দলই হবে জাহান্নামি। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! (একটি দল) এরা কোন দল? তিনি বললেন, আমি এবং আমার সাহাবিরা যার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
এ হাদিসে হক-সৎ দলের প্রতীক-নিদর্শন ও মাপকাঠি বর্ণনা করা হয়েছে- ১. রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ। ২. সাহাবায়ে কেরাম (রা.) আদর্শ। এই প্রতীক-নিদর্শন দীনের প্রতিটি বিষয়ের জন্য সুস্পষ্ট মাপকাঠি, যার ভিত্তিতে প্রত্যেকে ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে নিজেদের মতাদর্শ ও আমলের বিচার করতে পারে। এই মাপকাঠি-মানদন্ড ধারণ-গ্রহণ করলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত সব মুসলমানের জন্য সর্বোত্তম মাপকাঠি ও আদর্শ। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, বস্তুত রসুলুল্লাহর (সা.) (সুন্নতের) মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখেরাত দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে।
২. সাহাবায়ে কেরাম (রা.) সবাই ছিলেন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে গড়া শিষ্য ও তাঁর পবিত্র সংস্পর্শে দীক্ষিত। তাঁরা হলেন সেই ব্যক্তিত্ব, যারা সরাসরি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর দ্বারা পরিচালিত হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন। যাদের জন্য আল্লাহতায়ালা তাঁর সন্তোষ-সন্তুষ্টির পরোয়ানা ঘোষণা করেছেন। যারা ছিলেন রসুলুল্লাহর (সা.) সুন্নতের বাস্তবতা সম্পর্কে সম্যক অবগত। যারা সুন্নত থেকে সামান্যতম বিচ্যুতিকেও সহ্য করতেন না। এজন্য তাঁদের আদর্শ-তরিকা হচ্ছে হক-ন্যায়ের মাপকাঠি-মানদন্ড। সাহাবায়ে কেরাম যখন নবী (সা.) প্রেমের সর্বোত্তম ও নিখুঁত আদর্শ, তাঁদের মধ্যে যখন বিদ্যমান ছিল নবী (সা.) প্রেমের যাবতীয় আমল, তখন যে কাজগুলো তারা করেননি, তা আজও নবী (সা.) প্রেমের নামে করা যাবে না। কেননা সাহাবায়ে কেরাম দীনের নামে নতুন কিছু (বিদআত) উদ্ভাবন করাকে গুরুতর অপরাধ মনে করতেন।
হজরত নাফি (রহ.) বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, এক ব্যক্তি ইবনে ওমর (রা.)-এর পাশে হাঁচি দিয়ে বলল, ‘আলহামদুলিল্লাহ্ ওয়াসসালামু আলা রসুলিল্লাহ’। ইবনে ওমর (রা.) বললেন, আমিও তো বলতে পারি ‘আলহামদুলিল্লাহ্ ওয়াসসালামু আলা রসুলিল্লাহ’। কিন্তু (হাঁচির বেলায়) রসুলুল্লাহ্ (সা.) আমাদের এরূপ শিক্ষা দেননি। তিনি আমাদের এ ক্ষেত্রে শুধু ‘আলহামদুলিল্লাহি’ বলতে শিক্ষা দিয়েছেন।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, মদিনাতুল উলুম মাদরাসা, বসুন্ধরা, ঢাকা
বিডি প্রতিদিন
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমেদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D