২০শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৫
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির সাদা পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় জড়িতদের একটি তালিকা গোয়েন্দাদের হাতে পৌঁছেছে। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো দায়ের করা মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ১৫শ’ থেকে ২ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। অথচ চিহ্নিত লুটেরাদের নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে আলোচিত এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনানের বিরুদ্ধে সাদা পাথর লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর কোম্পানীগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী পাথরখেকোদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহারের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে অবহেলা এবং লুটেরাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৩৬তম বিসিএস কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি কোম্পানীগঞ্জে যোগদান করেন। তার উপস্থিতিতে সাদা পাথর এলাকায় পাথর চুরির ভিডিও ও ছবি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
শুধু প্রশাসনেরই নয়, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল অদুদ আলফু মিয়া, বিএনপির পদচ্যুত সভাপতি সাহাব উদ্দিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহার উদ্দিন এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়াসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও এসেছে। গোয়েন্দাদের হাতে থাকা ১৩০ জনের তালিকায় তাদের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বেশিরভাগই বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন।
সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর ও গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে পাথর লুটপাটের ঘটনা সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় হাইকোর্ট লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ইতোমধ্যেই গা-ঢাকা দিয়েছেন।
এরই মধ্যে র্যাব, পুলিশ ও যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযানে নামে। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদা পাথর থেকে লুট হওয়া প্রায় ৪ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার মেট্রিক টন পাথরও রয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় র্যাব-৯, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানে জৈন্তাপুর থানার আসামপাড়া এলাকা থেকে আরও প্রায় ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রকাশ্যে প্রতিবাদী হলেও অনেকেই রাতের আঁধারে পাথর লুটে নেমে পড়েন। বিজিবির দুটি ক্যাম্পের সামনেই সংরক্ষিত এলাকা থেকে পাথর লুট হলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর পেছনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশও থাকতে পারে।
এছাড়া কয়েক মাস ধরেই সাদা পাথরের ৯০ শতাংশ পাথর ও বালু লুট হয়ে গেছে। এর ফলে একসময় রেলওয়ের রোপওয়ে ছিল যে এলাকায়, তা এখন লুটপাটে নিশ্চিহ্ন। সংরক্ষিত এ অঞ্চলে লুটপাটের কারণে পাথর ও বালুর ঢিবি সমতল হয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, ‘সে সময়ে পুলিশের যে সক্ষমতা ছিল, তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করেছি। তবুও অনেকাংশে সফল হতে পারিনি। এটা সক্ষমতার ঘাটতি হতে পারে।’
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D