স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ৮:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২

স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কূটনীতিক, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ও জাতীয় সংসদের প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ’ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষ্যে সংগঠনের উদ্যোগে আগামী শনিবার (১৭ ডিসেম্বর ২০২২) বিকাল ৩টায় সিলেটের জালাবাদ গ্যাস ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানে সদয় সম্মতি প্রদান করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী।

সংগঠনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমানে সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ এহছানে এলাহী। বক্তব্য রাখবেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি মোঃ ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ প্রমুখ।

উল্ল্যখ্য, মরহুম স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন একাধারে কুটনীতিক, আমলা ও রাজনীতিক। তিনি ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। কূটনীতিক হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দায়িত্বপালনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১-৭২ সালে দিল্লীতে বাংলাদেশ মিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অসীম সাহসিকতা দেখিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠন এবং স্বীকৃতি আদায়ে ৪০টির বেশি দেশের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে অন্তত ৩৪টি দেশের স্বীকৃতি আদায়ে সক্ষম হয়েছিলেন। বাংলাদেশি হিসেবে একমাত্র তিনিই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করার গৌরব অর্জন করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ‘কলেজ অব উইলিয়াম এন্ড মেরি’ থেকে ১৯৮৪ সালে ‘মাহাত্মা গান্ধী শান্তি পুরস্কার’ লাভ করেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করে।

তিনি ১৯৭২ সালে জার্মানীতে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এছাড়া সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং ভ্যাটিকানেও একই পদে অধিষ্টিত ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থা (IAEA) এবং জাতিসংঘের ( শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (UNIDO) প্রথম স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন।

সিলেটের উন্নয়নে তিনি ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ। জীবদ্দশায় তিনি সিলেটের রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং দৃষ্টিনন্দন সিলেট রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণে তার অবদানের কথা সিলেটবাসী এখনও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

৭৫ এর ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সময় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আশ্রয়হীন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজ বাসায় আশ্রয় দিয়েছিলেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের স্পিকার মনোনীত হন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এবং ২০০১ সালের ১০ জুলাই স্পিকার থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করেন। হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার প্রাঙ্গণে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

মরহুম স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ১৯২৮ সালের ১১ নভেম্বর সিলেট শহরের দরগা গেইটস্থ রশিদ মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল