১৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:০৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২২
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জে হাওর দস্যুদের নাম জানালেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা। কৃষকদের অভিযোগ হাওরের বাঁধ নিয়ে দুর্নীতিকারীদের নাম প্রকাশ হওয়ার পর থেকে হুমকীর মুখে রয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা। বিশেষ করে বাঁধের দুর্নীতি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ -১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আপন ভাই ও নিকটাত্মীয়দের নাম উঠে আসায় এক কৃষক পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শণ করতে গেলে সেখানে নানা অনিয়ম তোলে ধরেন ধর্মপাশা উপজেলার রাজাপুর বড়হাটির কৃষক আবদুল মালেক। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আপন ভাই ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিছ,আওয়ামী লীগ নেতা রাজাপুরের আলমগীরসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোন্তাসির হাসান সরাসরি বাঁধ দুর্নীতির সাথে জড়িত। প্রতিটি পিআইসির বিপরীতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন তাঁরা।
উদাহরণ দিয়ে আরেক কৃষক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ১৮ লাখ টাকার বাঁধের জন্য ঘুষ দিতে হয় ২ লাখ টাকা। আর যাদের পিআইসি দেওয়া হয়, তাদের পূঁজি তেমন নেই। তাছাড়া, বিল থাকে বকেয়া। ফলে কাজ হয়না ষোলোআনা। যার ফলে দুর্ভোগ পোহান হাওরের হাজারো কৃষক।
এদিকে, হাওরের অনিয়ম ও দুর্ণীতি বিষয়ে আবদুল মালেক নামের এক কৃষকের মুখে হাওর দস্যুদের নাম উঠে আসার ভিডিও ক্লিপ দ্রæত ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনিয়ম তোলে ধরে কৃষক আবদুল মালেক বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা গিলে খেয়েছেন হাওর। এ সময় পাশ থেকে একজন দলকে দায়ী না করে ব্যক্তির নাম বলার অনুরোধ করেন। এ সময় কৃষক আবদুল মালেক বলেন, ‘পুবাইল্লা, চাতল, আশা এই তিন হাওরে ২৪ কেয়ার বোর ধান চাষ করি। কিন্তু সবতাই হাওরের পানিয়ে লইয়া গ্যাচে। এখন আমার বাইচ্চা-কাইচ্চা কিতা খাইবো ? কার ধারে যাইবো ? সরকারে তো আমরারে সারা বছর খানি দিত না। মনে কইলে সাহায্য হিসেবে ২০ কেজি চাল দিবে। কিন্তু আমার সারা বছর চলবে কিভাবে ?’
তিনি বলেন, এমপি সাবের ভাই রোকন চেয়ারম্যান টাকা দিয়ে পিআইসি দিয়েছেন। রাজাপুরের আলমগীর নেতা, বিলকিস নেতা কাজ বিক্রি করেছেন ২ লাখ টাকা করে। আবার মাছ মারার জন্য কেটে দেওয়া হয়েছে অনেক বাঁধ। মাছ ব্যবসাও রমরমা এমপি পরিবারের সদস্যদের।
হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধে এই দুর্নীতির ফল ভোগ করছেন জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় থেমে গেছে কৃষক পরিবারের চিরচেনা স্বাভাবিক জীবন। বছরের একটি ফসলকে কেন্দ্র করে যেখানে কৃষকদের সকল সুখ স্বপ্ন, সেখানে তাদের রাত কাটছে বিনিদ্র। জেলার ১৪ টি হাওরে বাধঁ ভেঙ্গে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে ৪ হাজার হেক্টর বোর ধান। নি:স্ব হয়েছেন ৫ উপজেলার ১৫ হাজার মানুষ। জেলায় এ বছর বোর চাষ হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর।
এদিকে হাওর পরিদর্শনে গিয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ.কে.এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরের মানুষদের জন্য খুব আন্তরিক। ২০১৭ সালের পর এবার কয়েকটি বাঁধ ভেঙে বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। প্রতি বছর সরকার হাওরের জন্য কোটি টাকা ব্যয় করছেন। আমরা এখন হাওরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করবো।’ বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওর পরিদর্শনে শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকোশলী এসএম শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমেদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D