৫২ কিলোমিটার রেলপথের স্লিপারে নেই নাটবল্টু!

প্রকাশিত: ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০১৯

৫২ কিলোমিটার রেলপথের স্লিপারে নেই নাটবল্টু!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকা থেকে রেলপথে সিলেটের ৩১৯ কিলোমিটার পথের হবিগঞ্জ অংশের ৫২ কিলোমিটার রেললাইনের স্লিপারের নাটবল্টু খুলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া এই পথে ৮৪টি ব্রিজ রয়েছে, যার বেশিরভাগই ঝুঁকিপূর্ণ। তার ওপর স্লিপারের নাটবল্টু খোলা। ফলে যেকোনও সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। রেললাইন মেরামত করা কর্মচারীরা জানিয়েছেন, জনবল সংকটের কারণে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
রেলওয়ে সূত্র মতে, ঢাকা-সিলেট রেললাইনের হবিগঞ্জের অংশের ৫২ কিলোমিটার রেললাইনে রয়েছে প্রায় ৮৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট। এর অধিকাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। আবার অনেক স্টেশনের অবস্থাও নাজুক রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি রেল ক্রসিংয়ে গেট না থাকায় সাধারণ লোকজনকে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার হতে হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্বৃত্তরা নাটবল্টু খুলে নেওয়ায় বিকল্প হিসেবে নতুন নাটবল্টু লাগিয়ে ঝালাই দিচ্ছেন রেলের কর্মীরা, যাতে আর চুরি না হয়। রেললাইন মেরামত করা কর্মচারীরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনের তুলনায় তাদের জনবল অনেক কম। ফলে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্মচারী রফিক মিয়া বলেন, ‘আমাদের জনবল একেবারে কম। যেখানে মাঠ পর্যায়ে ২৪ কর্মচারী থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র ৮ জন। জনবল না থাকায় অনেক সময় ঠিকভাবে কাজের তদারকি করা সম্ভব হয়নি। এরপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি রেলপথ সঠিকভাবে মেরামত করার।’
স্লিপারে নাটবল্টু লাগানোর কাজ চলছে। মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজার এলাকার বাসিন্দা রফিক মিয়া জানান, শাহজিবাজার এলাকার রেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোনও গেট নেই। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। অনেক মানুষ হতাহত হওয়ার পরও গেট নির্মাণ করা হয়নি। বিষয়টি অনেকবার রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলেও আমলে নেয়নি। একই এলাকার বাসিন্দা আলআমিন জানান, রেলপথের অধিকাংশ স্থানেই ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ট্রেন ব্রিজের ওপর উঠলে নড়াচড়া করে। আবার অনেক স্থানেই নাটবল্টু খোলা। রেললাইনের কোথাও কোথাও কাঠ জোড়া লাগিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেকোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

শায়েস্তাগঞ্জের বাসিন্দা কাশেম মিয়া জানান, ঢাকা-সিলেট রেলপথের স্লিপারে নাটবল্টু নেই বললেই চলে। কারও এ বিষয়ে মাথাব্যথা নেই। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, রেললাইনের স্লিপারের নাটবল্টু দুর্বৃত্তরা খুলে নিয়ে যায়। এজন্য এখন স্লিপারের নাটবল্টু লাগিয়ে তার ওপর ঝালাই দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের মূল সমস্যা জনবল সংকট। প্রয়োজনের তুলনায় জনবল অনেক কম। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি সার্বক্ষণিক রেললাইনের সঠিক তদারিক করতে। প্রয়োজনীয় জনবল দূর করতে পারলে আরও বেশি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল