ভাসানী ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় বক্তরা: অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্টায় মওলানা ভাসানীর আর্দশকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৬

ভাসানী ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভায় বক্তরা: অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্টায় মওলানা ভাসানীর আর্দশকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে

আফ্রো-এশিয়া-লাতিন আমেরিকার বঞ্চিত নির্যাতিত মেহনতি মানুষের মুক্তি সংগ্রামের মুক্তি সংগ্রামের আপোষহীন যোদ্ধা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন সিলেটের উদ্যেগে এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দিদার ইবনে তাহের লস্করের পরিচালনায় সভায় বক্তারা মওলানা ভাসানীর সফল কর্মময় জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, লাল মওলানা হিসেবে পরিচিত মওলানা ভাসানীকে নির্যাতীত মানুষ উৎপীড়ন বিরোধী সংগ্রামের মহানায়ক হিসাবে শ্রদ্ধা করে এসেছে। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং এই আন্দোলনের পথপ্রদর্শক।
স্বাধীনতার পরেও আমাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা, জনগণের অধিকার রক্ষা এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় তিনি নিরলস সংগ্রাম করে গেছেন।জীবন সায়াহ্নে এসেও গঙ্গার পানিতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে তিনি ঐতিহসিক ফারাক্কা লংমার্চের ডাক দেন এবং এতে নেতৃত্ত্ব দেন। খেলাফতে রাব্বানী বা বিশ্বপ্রভুর প্রতিনিধিত্বমূলক রাষ্ট্রীয় সমাজ গড়াই ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। মানুষের সেবা ও নিজের জীবনাদর্শ প্রচারের জন্য গড়ে তুলেছেন খোদায়ী খিদমতগার সমিতি। উন্নত শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে আধুনিক সাচ্চা মুসলিম গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্থাপন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সাম্প্রদায়িকতা ছিল তাঁর দু’চোখের বিষ। ধর্মের নামে কুসংষ্কার ও গোড়ামীকে প্রশ্রয় দেননি তিনি কখনোই। ইসলামের সাম্যবাদী ভাবাদর্শ ও সমাজবাদী দর্শনের সংমিশ্রণে একটি শোষণহীন-সাম্য-মৈত্রীর সমাজ প্রতিষ্ঠাই ছিল এই লোকায়িত জননায়কের আজন্ম লালিত স্বপ্ন।শোষণ, পীড়ন, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ছিল তাঁর প্রাণপণ লড়াই। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের পোশাক পরে, মাটির শানকিতে কৃষকের খাদ্য খেয়ে, গ্রামের পর্ণ কুটিরে বাস করেও তিনি ছিলেন দুর্বিনীত শাসকদের ত্রাস। তাঁর ডাকে পঙ্গপালের মতো লাখ লাখ মানুষ নেমে আসতো ঘর ও কর্মস্থল ছেড়ে পথে। মজলুম জননেতার ‘খামোশ’ আওয়াজে কেঁপে উঠেছিল জালিমের সিংহাসন।
ক্ষমতাকে তুচ্ছ করা এই মহান জনগণমন অধিনায়কের পূণ্যস্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁকে স্মরণ করে বাংলাদেশে শোষণ-বঞ্চনা ও জুলুম-পীড়নমুক্ত, সামাজিক ইনসাফ ভিত্তিক সাম্য-মৈত্রী-শান্তির একটি সমাজ গড়তে কেবল মওলানা ভাসানীর দেখানো পথে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
সিলেট নগরীর নজরুল একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্টিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ও ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মসউদ খান, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এড. গিয়াস উদ্দিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. এমাদুল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, শিক্ষাবিদ লে. কর্ণেল (অব:) সৈয়দ আলী আহমদ, ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি একেএম আহাদুস সামাদ, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশন সিলেট জেলার সভাপতি প্রকৌশলী মাহমুদুর রশিদ মসরুর, অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি মুহিত চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, রাজনীতিক ও লেখক ড. নেছার আহমদ কাওছার, ফাউন্ডেশনের সদস্য সাবের সফকাত জাহান চৌধুরী, কবি নাঈমা চৌধুরী। ফাউন্ডেশনের সদস্য কলামিষ্ট জিবলু রহমানের স্বাগত বক্তব্যে এবং হাফিজ মাওলানা নুরুল আমিনের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সূচীত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়ার প্রবীণ ভাসানী ন্যাপ নেতা আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ’র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মহি উদ্দিন চৌধুরী, এড. চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, মো: জমির আহমদ, শফিক আহমদ শফি, রেদোয়ান আহমদ হাসান, আব্দুল হাই রাজন, মো. জহিরুল ইসলাম রাসেল, সুহেল ইবনে রাজা, এডভোকেট মোবারক হোসেন, ডা. এমজি কিবরিয়া, আনোয়ার উদ্দিন, মো. তাজ উদ্দিন, মোঃ শফিকুল ইসলাম, তৌফিকুর রহমান, আনোয়ার আহমদ প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল