১৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২১
ডেস্ক রিপোর্ট ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সরকারি কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অভিনব কৌশলে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে ৭৩ হাজার ৫’শ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
কুলাউড়া সরকারি কলেজ ও প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, গত মাস চারেক আগে কুলাউড়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তির জন্য আবেদন করেন নিজেদের মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ একাউন্ট দিয়ে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ০১৬১০০৭২৪৬৬ মোবাইল নাম্বার থেকে কুলাউড়া সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মেয়েসহ প্রায় ১০/১২জন শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে ফোন দেওয়া হয়। লকডাউন পরিস্থিতি দেখিয়ে বিকাশ একাউন্টে বোর্ড থেকে উপবৃত্তির ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা পরিচয়ধারী ব্যক্তি। এজন্য শিক্ষার্থীদের বিকাশ একাউন্ট কনফার্মেশনের (নিশ্চিতে) তাঁদের মোবাইলের ম্যাসেজে একটি কোড পাঠানো হয়েছে। কোডটি ফোনকলে থাকাবস্থায় দিতে হবে। পরে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বিকাশ একাউন্টের পিন কোড দিয়ে ক্যালকুলেটরে গুণ দিতে এবং একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করতে বলা হয়। এভাবেই বিকাশের পিন হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেয় ঐ চক্র।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন নাম্বার থেকে কল দিয়ে মরিয়ম আক্তার মহি, সামিয়া ইসলাম, সোহানা আক্তার তাজিন, মাছুমা আক্তার জ্যোতিসহ প্রায় ১০/১২ জন শিক্ষার্থীকে ফোন দেয় প্রতারক চক্র। বিষয়টি টের পেয়ে যাওয়ায় অন্য শিক্ষার্থীরা বেঁচে গেলেও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া তাবাসসুমের কাছে দুই ধাপে ৪৯ হাজার টাকা এবং একই শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিয়া তাসনিমের কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫’শত টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ওই নাম্বারটি সোমবার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রয়েছে।
সাদিয়া তাবাসসুম জানান, ‘সোমবার বিকেলে উপবৃত্তির টাকা প্রদানের ০১৬১০০৭২৪৬৬ মোবাইল নাম্বার থেকে আমাকে ফোন দিয়ে শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয় দেন এক ব্যক্তি। লকডাউনের জন্য কলেজ বন্ধ তাই শিক্ষাবোর্ড থেকে সরাসরি বিকাশ একাউন্টে টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য বিকাশ একাউন্টের সত্যতা যাছাই ও উপবৃত্তির টাকা বিকাশে পাঠানোর জন্য আমার মোবাইলে একটি ম্যাসেজ পাঠানো হচ্ছে। ম্যাসেজে থাকা কোডটি দ্রুত তাঁকে দিতে হবে। কোডটি দেওয়ার পর উপবৃত্তির টাকা গেছে কিনা এজন্য ব্যালেন্স চেক করতে বলেন ওই লোকটি। কোন টাকা আসেনি জানালে ওই লোকটি আমাকে বলেন আপনার একাউন্টে উপবৃত্তির টাকা সচল করতে দ্রুত যেকোন বিকাশ এজেন্ট থেকে ২৪ হাজার ৫’শ টাকা ক্যাশইন করতে এবং তখন উপবৃত্তির টাকাসহ ক্যাশ ইনের এমাউন্ট একসাথে দেখাবে। না হলে উপবৃত্তির টাকা এই একাউন্টে সচল (লেনদেন) হবেনা। তাই আমি বাড়ির পাশের বাজারে বিকাশ এজেন্ট থেকে আমার একাউন্টে টাকা ক্যাশ ইন করি। ক্যাশ ইনের ম্যাসেজ আসলেও একাউন্টে ব্যালেন্স শুন্য দেখি। তখন ওই লোকটিকে কল দিলে তিনি বলেন আমার একাউন্টে সমস্যা তাই উনাদের দেওয়া আরেকটি ০১৯৮৯-২১৪৮৮৮ নাম্বারে দ্রুত না পাঠালে ক্যাশ ইনের টাকাসহ উপবৃত্তির টাকা আর ফেরত পবোনা। সেই টাকা ফেরত পাবার জন্য আমি আবার ০১৯৮৯-২১৪৮৮৮ নাম্বারে টাকা পাঠাই একই এজেন্ট থেকে। এরপর একই ভাবে টাকা যায়নি বলে আবারো ২৮ হাজার ৫’শ টাকা চায় ওই লোকটি। তখন আমি নিশ্চিত হই এই লোকটি প্রতারক। এরপর থেকে একাধিকবার কল দিলেও ফোনটি রিসিভ করেনি ওই লোকটি।
একই ভাবে ফাহমিয়া তাসনিম নামে কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৪ হাজার ৫’শ টাকা হাতিয়ে নেয় ০১৬১০০৭২৪৬৬ ওই নাম্বার থেকে কল দেওয়া লোকটি।
কুলাউড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার ঘটনাটি জেনে সোমবার রাতেই আমরা থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে অবগত করেছি। এবং শিক্ষার্থীদের সচেতন করে দিয়েছি প্রতারক থেকে সতর্ক থাকতে। কলেজের বিষয় কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারো জানার কথা নয়। শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে জানা উচিত।’
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ‘প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থী সাদিয়া তাবাসসুম থানায় একটি জিডি করেছেন। কলেজ কৃর্তপক্ষও জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করছি। এসব প্রতারকরা খুবই কৌশলী তাই তাদের চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রযুক্তির যুগে শিক্ষার্থীরা সতর্ক হওয়া উচিত।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমেদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D