১৮ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২১
..
ছেচল্লিশ বছর আগে আজকের দিনেই বাংলাদেশের জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ঘাতকরা। কিন্তু সুপরিকল্পিত সেই হত্যাকাণ্ডের জন্য ১৫ আগস্ট তারিখটা বেছে নেওয়া নিছকই কোনও ঘটনা নয় বলে ভারতের সাবেক সামরিক ও কূটনীতিক কর্মকর্তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
জাতি হিসেবে ভারতীয়দের সবচেয়ে আনন্দের ও গৌরবের দিন দেশের স্বাধীনতা দিবস, ১৫ আগস্ট। সেই দিনটিকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে শোকাবহ দিবসে পরিণত করার মধ্যে একটা ষড়যন্ত্র ও ভূ-রাজনৈতিক বার্তা অবশ্যই ছিল বলে সরাসরি জানাচ্ছেন তারা।
যেমন, এদেরই একজন বীর চক্র খেতাবে ভূষিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক কর্নেল অশোক তারা। একাত্তরের ১৭ জানুয়ারি ধানমন্ডিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কব্জায় থাকা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের প্রায় একার হাতে উদ্ধার করেছিলেন এই সেনা কর্মকর্তা। কয়েক মাসের শিশুপুত্র জয়কে কোলে নিয়ে শেখ হাসিনাও ছিলেন তার মধ্যে— পরে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সরকার কর্নেল তারাকে মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননাতেও ভূষিত করেছে।
সেই কর্নেল তারা এদিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলছিলেন, ‘এমনি এমনি তো ১৫ আগস্ট তারিখটা বেছে নেওয়া হয়নি। আজ এত বছর পরেও নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য ওই দিনটি সবচেয়ে শোকের দিন। কয়েকজন মৌলবাদী ও ক্ষমতালিপ্সু লোক সেদিন মানবতাকে হত্যা করেছিল বলে আমি মনে করি।’
‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নকে ধূলিস্যাৎ করার মধ্যে দিয়ে তারা প্রতিবেশী ভারতকেও একটা বার্তা দিতে চেয়েছিল— তোমাদের স্বাধীনতা দিবসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূর্ত প্রতীককে হত্যা করা হলো।’
কর্নেল (অব.) অশোক তারা কর্নেল (অব.) অশোক তারা
‘বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ওই ষড়যন্ত্র শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি, সেটা অন্য প্রসঙ্গ। কিন্তু বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে অনেকগুলো বছরকে তারা টালমাটাল করে দিতে পেরেছিল অবশ্যই’, বলছিলেন প্রবীণ ওই সামরিক বিশেষজ্ঞ।
সাবেক কূটনীতিবিদ অরুণ ব্যানার্জি মালদ্বীপ, গ্রিসের মতো দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশ ও ভোরতের কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন দানা বাঁধছে, দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী ও ঢাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের মতো দুই দিকপাল রাষ্ট্রনেতা ক্ষমতায়, সেই সময় তিনি দীর্ঘদিন ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন।
অ্যাম্বাসাডর ব্যানার্জিও এদিন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আততায়ীরা ১৫ আগস্ট তারিখটা বেছে নিয়েছিল খুব সচেতনভাবে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে রক্তের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, সেই ইতিহাসটা মুছে দিতেই যেন ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ওই হামলা চালানো হয়।’
সাবেক কূটনীতিবিদ অরুণ ব্যানার্জি সাবেক কূটনীতিবিদ অরুণ ব্যানার্জি
‘ওই আততায়ীরা স্পষ্টতই পাকিস্তান ও সিআইএ-র মদতপুষ্ট ছিল। এবং ১৫ আগস্ট সকালে হামলাটা চালিয়ে তারা বার্তা দিতে চেয়েছিল, শেখ সাহেব ভারতের এত প্রিয় মানুষ, কিন্তু তাদের স্বাধীনতা দিবসেই তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে আমরা সপরিবারে তাকে নিকেশ করেন এলাম … কিন্তু ভারত কিছুই করতে পারলো না!’
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের আগে তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ঘাটতি হয়েছিল কিনা, বা ভারতের সেখানে কোনও ব্যর্থতা ছিল কিনা– তা নিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চান না।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে– বজ্রপাতের মতো এই খবর যখন দিল্লিতে আসে, তখন দেশের বেশির ভাগ মন্ত্রী, এমপিরা সকলেই রাষ্ট্রপতি ভবনে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদের দেওয়া ‘অ্যাট হোম’ অনুষ্ঠানে তারা সেখানে মিলিত হয়েছিলেন, কিন্তু সেই আনন্দ আসর নিমেষেই পরিণত হয় শোক আর বিহ্বলতায়।
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D