আরিফের প্রতিচ্ছবি মিফতায়, জামায়াতের জয়নাল ফ্যাক্টর -জমিয়ত প্রার্থী মাঠে

প্রকাশিত: ৯:২১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫

আরিফের প্রতিচ্ছবি মিফতায়, জামায়াতের জয়নাল ফ্যাক্টর -জমিয়ত প্রার্থী মাঠে

সি লে ট ৪
আরিফের প্রতিচ্ছবি মিফতায়, জামায়াতের জয়নাল ফ্যাক্টর -জমিয়ত প্রার্থী মাঠে

ওয়েছ খছরু ও মিনহাজ উদ্দিন

 

 

সিলেট-৪ আসনের ভোটারদের কাছে স্বপ্নের প্রার্থী সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকে এখনো তার জন্য অপেক্ষা। কয়েকটি আলোচিত ইস্যুতে গিয়েছেনও এলাকায়। সমাধানও করেছেন। সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ থেকে নির্বাচন করবেন কিনা- পরিষ্কার করেননি। তবে দৌড়ঝাঁপে মিলেছিল ইতিবাচক সংকেত। কিন্তু পিছু হটলেন আরিফ। সিলেট নগর ছাড়তে চান না তিনি। এখানেই জন্ম, বেড়ে ওঠা, রাজনীতি সব। তার পিছুটানে নির্বাচনকে মাথায় রেখে অনেক আগেই নেমেছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। তার চোখ ছিল নগর মসনদে। কিন্তু দলেরই কারও কারও পরামর্শে নামতে হলো সংসদ নির্বাচনে। কেন্দ্রীয় নেতা। ছাত্রদল থেকে বিএনপি করছেন। চেনা-জানা ভোটের ময়দান। বেগ পেতে হয়নি। অবাধ লুটতরাজের স্বর্গরাজ্যের ওই এলাকায় ভোটের মাঠে থেকে তিনি নিজেকে রেখেছেন পরিচ্ছন্ন। বিতর্কের ঊর্ধ্বে। সাদাপাথর, জাফলং কিংবা জৈন্তাপুরের কোনো লুটপাটেই তার নজর নেই। এমনকি প্রলোভনে পড়েননি। সবার সঙ্গে মিলেমিশে ধানের শীষের দুর্গ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন। এরই মধ্যে মিফতাহ’র মধ্যে সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতিচ্ছবি দেখছেন এ আসনের ভোটাররা।

 

দিনে দিনে বাড়ছে জনপ্রিয়তা, ভোটও। ভোটের মাঠে বাধা আসে, সেগুলো চলে যায়। প্রথমেই নিজ দলের অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে মিফতাহকে। সেটিও একটি পরিচ্ছন্ন লড়াই। যে যার মতো মাঠে কাজ করছেন। সবার সঙ্গে সবার মিল। আর মিফতাহ’র হাতে দলের চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ৩১ দফা। মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সামনে কী হবে জানি না। তবে এ জাতির মুক্তির সনদ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষিত ৩১ দফা। সেটি এখন আর তারেক রহমানের সনদ নয়, সেটি হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা বাংলাদেশের মুক্তির সনদ। এ কারণে এই ৩১ দফা নিয়ে যেখানেই যাচ্ছি মানুষ সাড়া দিচ্ছে, প্রাণভরে গ্রহণ করছে। বিএনপি সাধারণ মানুষেরই দল। মানুষ যা চায়, বিএনপিও তাই চায়। সুতরাং সিলেট-৪ আসনে ইতিমধ্যে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ আসনে ভোটের মাঠে শুধু মিফতাহ নয়, বিএনপিতেই আছেন একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে ‘মুরুব্বিকে’ নিয়ে আছে মাতামাতি। তিনি সিলেট জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা আব্দুল হাকিম চৌধুরী। কয়েকবারের উপজেলা চেয়ারম্যান। গোয়াইনঘাটে রয়েছে তার শক্ত অবস্থান। এ আসনে ভোটের মাঠে নেমেছিলেন সিলেট নগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর একপর্যায়ে তিনিও আপাতত রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। তবে তার বলয়ের নেতারা বলছেন; ভোটের মাঠে আছে সেলিম। তার পক্ষে চলছে প্রচারণা। এ ছাড়া- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় আইনজীবী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান সেলিম, সিলেট জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্য প্রবাসী হেলাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা আব্দুল হক ও সিলেট জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আল আসলাম মুমিনও ভোটের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। হেলাল উদ্দিন ইতিমধ্যে কয়েকটি শোডাউনও দিয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর চোখ এ আসনের দিকে। এ আসনে রয়েছেন দলের শক্তিশালী প্রার্থী। তিনি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল জয়নাল আবেদীন। এক নামেই পরিচিত। জৈন্তাপুরে রয়েছে তার শক্তিশালী অবস্থান। এখানে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন।

সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় দুদকের তালিকায় নাম এলেও সেটি ভোটের মাঠে তেমন প্রভাব ফেলছে না। বরং জয়নাল নিজের অবস্থান সুসংহত করতে ছুটছেন গ্রামে গ্রামে। জয়ের স্বপ্নও দেখছেন তিনি। বলছেন- এ আসনের মানুষ তাদের নিজের প্রার্থী চায়। এই আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে তিনি মাঠে। জমিয়তের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ আলীও শক্তিশালী প্রার্থী। হরিপুর, লাফনাউট, দরবস্তসহ শতাধিক মাদ্রাসা রয়েছে এ আসনে। সিলেট-৫ আসনের পর জমিয়তের শক্তিশালী অবস্থান এ আসনে। এডভোকেট মোহাম্মদ আলীও যোগ্য প্রার্থী। সাবেক মন্ত্রী সাইফুর রহমানের সঙ্গে ভোটের মাঠে যুদ্ধ করেছেন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। এ কারণে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য তিনি। দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। বিএনপি’র সঙ্গে জোট হলে কপাল পুড়তে পারে তার। নতুবা জয়ের স্বপ্ন তিনি দেখছেন। তীব্র লড়াই গড়ে তোলার ইঙ্গিত তিনি ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে দিয়েছেন। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী কেন্দ্রীয় উলামা বিষয়ক সম্পাদক মুফতি আলী হাসান উসামা। তরুণ প্রার্থী, দেশ জুড়ে পরিচিত বক্তা। সিলেটেরই সন্তান তিনি। এবার খেলাফত মজলিসের ট্রামকার্ড তিনি। যেদিকেই যাচ্ছেন সাড়া পাচ্ছেন। এ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নাজিম উদ্দিন কামরান। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে গেলে প্রার্থী হতে পারেন ছাত্র সমাজ সিলেটের সাবেক সভাপতি ও রওশন গ্রুপের জেলার সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান ডালিম। তরুণ নেতা, পরিচিত মুখ। জামায়াতের জয়নালের এলাকায় তার বাড়ি। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটে ভোটে তার অবস্থান রয়েছে।

মানবজমিন