জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া  দিলেন সাবেক মেয়র আরিফ ! ডিসি  সারওয়ার আলমের প্রতি বিশ্বাস সিলেট বাসীর!

প্রকাশিত: ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫

জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া  দিলেন সাবেক মেয়র আরিফ ! ডিসি  সারওয়ার আলমের প্রতি বিশ্বাস সিলেট বাসীর!

জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া  দিলেন সাবেক মেয়র আরিফ ! ডিসি  সারওয়ার আলমের প্রতি বিশ্বাস সিলেট বাসীর!

 

অনলাইন ডেস্ক

দি সিলেট খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুটি মামলা গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন! সবার নজর পরবর্তীতে কি হয় !

সিলেটের জেলা প্রশাসককে শোকজ

নিউজ ডেস্ক

সিলেটের জেলা প্রশাসক কে শোকজ করা হয়েছে।

 

দি সিলেট খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষক ও ভাইস প্রিন্সিপালের বহিষ্কারাদেশকে কেন্দ্র করে দায়ের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এ শোকজ জারি করেছেন সিলেটের সিনিয়র সহকারী জজ (সদর) আদালত।

 

তবে রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সেটি তার হাতে পৌঁছায়নি বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।

 

নোটিশে তাকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাবের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

শোকজ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা আবেদা হকের আইনজীবী ইরশাদুল হক।

ফিরে দেখা

যুগান্তর প্রত্রিকায় প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদসহ ১২ জনকে শোকজ করেছেন আদালত

সিলেটের জেলা প্রশাসককে শোকজ

 

 

 

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদসহ ১২ জনকে শোকজ করেছেন আদালত। জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকীর করা মামলায় বৃহস্পতিবার সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক রশিদ আহমদ মিলন তাদের শোকজ করে। একইসঙ্গে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের মামলার আসামিদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেওয়া হলেও বিষয়টি আদালতের বাইরের কেউ অবগত হননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় বাদী জেলা প্রশাসককে নির্দিষ্ট দায়িত্ব বহির্ভূত কোনো কার্যক্রম দ্বারা সমিতি পরিচালনা, তহবিল বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারেন সে ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন। আদালত তা আমলে নিয়ে শোকজ করেন।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করছি আমরা। সমিতি যে গঠনতন্ত্রের কথা বলছে আসলে ওরকম নীতিমালা উল্লেখিত কিছু নেই। আদালতের নোটিশের কপি পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব।’

জালালাবাদ অন্ধ কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী বলেন, ‘জেলা প্রশাসক আমাদের এজিএমে উপস্থিত হয়ে বলেন মিটিংয়ে মানুষ কম। এটার এডহক কমিটি গঠন করা হবে। নতুন করে অডিট করা হবে। আমরা বলেছি, এডহক কমিটি গঠনের কোনো নিয়ম নেই সমিতির সংবিধানে। অডিট করাতে পারেন, ভালো একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে। প্রতি বছর সমিতির অডিট হয়।’

প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জনের সাহায্য সহযোগিতায় চলে আসছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এডহক কমিটি গঠন করে তিনটি চেকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের এফডিআর থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক চেকে স্বাক্ষর করেছেন। কত টাকা উঠানো হয়েছে তা জানি না। একটি সুন্দর প্রতিষ্ঠান নষ্ট হয়ে যাবে এভাবে চললে। এটি সিলেটের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।’

লক্ষ্য করুন

পাথরকাণ্ডে সিলেট ছাড়লেন ডিসি মুরাদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৮, আগস্ট ২০, ২০২৫

সিলেট: ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পট পরিবর্তনের পর সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হয়ে আসেন মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

কিন্তু তার প্রস্থানটা সুখকর হলো না। পাথর লুটপাট ঠেকাতে ব্যর্থ জেলা প্রশাসনের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। তাই সমালোচনার মুখে বিতর্কিত হয়ে মাত্র এক বছরের মধ্যেই সিলেট ছাড়তে হলো ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে।

বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে তার কার্যালয়ে বিদায়ী সংবর্ধনা দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সংবর্ধনা শেষে দুপুর ১২টার পর সরকারি গাড়িতে করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গানম্যানসহ বেরিয়ে যান মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

পাথর কাণ্ডে সমালোচিত হওয়ায় গত সোমবার (১৮ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে মাহবুব মুরাদকে ওএসডি করা হয়। তাই সমালোচনা মাথায় নিয়ে অনেকটা নীরবে বিদায় নিতে হলো তাকে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মাহবুব মুরাদের স্থলাভিষিক্ত (নতুন নিয়োগ পাওয়া) জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এসে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সূবর্ণা সরকার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে, মাহবুব মুরাদ সিলেটের জেলা প্রশাসক হয়ে আসার পর গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও সাদাপাথরসহ বিভিন্ন কোয়ারি থেকে বালু ও পাথর হরিলুট করার অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে সাদাপাথরে নজিরবিহীন পাথর লুটপাটের ঘটনায় দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর থেকেই পাথর লুটপাটে প্রশাসনের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।

এরই মধ্যে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও বলেছেন, পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের দায় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশ উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পরদিনই সিলেটের জেলা প্রশাসককে ওএসডি করা হয়।

এর আগে সাদা পাথর পরিদর্শনে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারাও পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে বলে জানান।

প্রশাসনের অভিযানে উদ্ধার: সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুটপাটের পর গত ১৩ আগস্ট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের জরুরী বৈঠকের পর লুণ্ঠিত পাথর সাদা পাথরে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। বৈঠকের ৫ সিদ্ধান্তের একটি ছিল সাদা পাথরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া এবং কোয়ারি এলাকায় সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী মোতায়েন। এরপর রাতেই অভিযানে নেমে ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে যৌথবাহিনী।

পরদিন বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২নং পুর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর আলমকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ওইদিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ এলাকা থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।

এরপর শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদর, কালাইরাগসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। একই দিনে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০-২০০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর ৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত ১৬ আগস্ট ধোপাগুল স্টোন ক্রাশার মিল ও বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মজুদকৃত আড়াই লাখ ঘনফুট সাদাপাথর এবং জাফলং এলাকা থেকে লুট হওয়া পাথর জব্দ করা হয়। এ কয়েকদিনে সর্বাধিক পাথর মিলেছে ধোপাগুলে।

এছাড়া সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাত আনুমানিক ১১টা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ পাথরগুলো উদ্ধার করা হয়।

এ অবস্থায় গত রোববার (১৭ আগস্ট) সামনে আসে জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর রাংপানি পর্যটন এলাকা থেকে পাথর লুট এবং কানাইঘাটের লোভাছড়ায় নিলামের কাগজ ব্যবহার করে পাথর লুটেরও অভিযোগ ওঠে।

পরদিন সোমবার জৈন্তাপুরে অভিযানে ৩৫ ট্রাক বালু ও সাড়ে ৯ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। এরপর মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জব্দ করা হয় ২০ হাজার ফুট পাথর ও ২৮ হাজার ঘনফুট বালু। একই দিন উৎমাছড়া সংলগ্ন আদর্শ গ্রাম থেকে আরো ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করে বিজিবি।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত অভিযানে ৮ লাখ ৭০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ ও প্রতিস্থাপন করা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ঘনফুট।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে ব্যাপক লুটপাট শুরু হয়।

খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর এক সমীক্ষায় ওই এলাকায় প্রায় দেড় কোটি ঘনফুট পাথরের মজুদ ছিল বলে জানানো হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, দিনরাত পাথর লুটপাট ও পাচারের কারণে শুধু খনিজ সম্পদই নয়, ধ্বংস হচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রগুলোও। ভোলাগঞ্জের ঘটনায় সমালোচনার মুখে প্রশাসন দায়সারা অভিযান চালাচ্ছে, বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

সারা দেশে ৫১টি কোয়ারি (পাথর ও বালু উত্তোলনের নির্দিষ্ট স্থান) আছে। এর মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে আছে আটটি পাথর কোয়ারি।

এর বাইরে সিলেটে সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়াসহ আরও ১০টি জায়গায় পাথর আছে। এসব জায়গা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে এসব পাথর আসে। ২০২০ সালের আগে সংরক্ষিত এলাকা বাদে সিলেটের আটটি কোয়ারি ইজারা দিয়ে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হতো। তবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর আর পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হয়নি।

এদিকে, সিলেটের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সব সময় পাথর উত্তোলনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। বিগত পাঁচ বছরে তারা নানাভাবে কোয়ারি ইজারা আবার চালুর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি। এ অবস্থায় রাতের বেলা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা হতো।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর টানা এক বছর বেপরোয়াভাবে পাথর লুটপাট চলে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, সাদাপাথর থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পাথর লুটপাট করেছে। দিনে অন্তত ৬ হাজার নৌকা ব্যবস্থার হয়েছে লুটপাটে। প্রতি নৌকার সঙ্গে অন্তত ১০-১২ জন লোক ছিলেন। পুরো সাদা পাথর এলাকা থেকে হাজার কোটি টাকার পাথর লুটের দাবি করেছিলেন দুদকের এ কর্মকর্তা। এছাড়া লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের দায় দেখছেন, বলেও উল্লেখ করেন।

 

আরিফুল হক চৌধুরী সাবেক মেয়র। টানা ১০ বছর নগরের ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন। এখন বিএনপি’র চেয়ার পারসনের উপদেষ্টা। গণ-অভ্যুত্থানের দিন থেকেই নগরের মানুষের শান্তিশৃঙ্খলায় কাছে ছিলেন। এখনো আছেন। তবে সম্প্রতি আরিফুল নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন। প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে তার সক্রিয় হওয়া। আর সক্রিয় হয়েই নগরের জঞ্জাল দূর করার কাজে সঙ্গী হয়েছেন। প্রথম দিন এসেই সফলতা। জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সঙ্গে মাঠে নেমে নগর পরিষ্কারে হাত দিয়েছেন। এরইমধ্যে কিন ব্রিজকে করেছেন হকারমুক্ত। হাঁটা-চলার জন্যই এই ব্রিজকে খোলা রাখা হয়েছে। কিন ব্রিজের দক্ষিণ অংশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। নগর নিয়ে স্বপ্ন দেখেন আরিফুল হক। আওয়ামী লীগ জমানায় ছিলেন বিএনপি’র ম্যাজিকম্যান। জনপ্রিয় মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে হারিয়ে ২০১৩ সালে মেয়র হয়েছিলেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। দলের নির্দেশ মেনে শেষবার আর নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে নগর নিয়ে রয়েছে তার দরদ। নিজের শাসনামলে নগরকে সাজিয়েছেন নিজের মতো করে। উন্নয়ন হয়েছে অনেক। সেগুলোর ধারাবাহিকতা থাকেনি। যেটুকু করে এসেছিলেন সেগুলোও অবহেলায় পড়ে আছে। এ নিয়ে আছে সমালোচনাও। তবে নগরের স্বার্থে আরিফ এক্টিভ, সেটি তিনি শনিবার প্রমাণ করলেন। প্রশাসনের তরফ থেকে আহ্বান ছিল সহযোগিতা করার।

 

এ কারণে জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া দিয়ে মাঠে নামলেন। নগরের সবকিছু তার নখদর্পণে। কোথায় কী করতে হবে সব মুখস্থ। এই অবস্থায় আরিফের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন; আরিফুল হক চৌধুরী কেন মাঠে। তিনি তো ১০ বছরে সফল হতে পারেননি। সেটির ব্যাখ্যাও শনিবার দিয়েছেন আরিফ নিজেই। বলেছেন; বিগত ১০ মাস নগরের জঞ্জাল দূর করতে প্রশাসনের কেউ এগিয়ে আসেননি। নিশ্চুপ ছিলেন। ডিসি মো. সারওয়ার আলম যোগদানের পরপর তিনি নগর সাজানোর বিষয়টি সামনে আনেন। আমাদের সহযোগিতা চান। সাবেক জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সহযোগিতায় নেমেছি। শুধু আমি নয়, নগরের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নগর ঠিকমতো চললে সবারই লাভ। এদিকে-সিলেটের হকার বড় সমস্যা। সেটি অনুধাবন করেছেন জেলা প্রশাসক নিজেই। আর সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নগরের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে। রাজনীতিবিদরাও ছিলেন। হকার পুর্নবাসনে আরিফুল হক চৌধুরী একমত। নিজেদের শাসনের সময় একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিভাগীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলে হকারমুক্ত মডেল সড়কও করেছিলেন। কিন্তু নানা অস্থিরতায় সেই প্রক্রিয়াও ভেস্তে গেছে। তবে সিটি করপোরেশন হকার পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত জায়গা করেছে। হকার মার্কেট মাঠ। সেগুলো সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে হকাররা ওখানে থাকতে সমস্যা কোথায়। সেটি নিয়ে এখন ভাবছেন আরিফ। জানান কে কোথায় বসে ব্যবসা করবেন সেটি সিদ্ধান্ত নেবেন যারা ব্যবসা করবেন।

নগরের সড়ক ও ফুটপাথে কেউ বসতে পারবেন না। সেটা জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত। কোনো ভালো উদ্যোগ যখন প্রশাসন নেয় তখন তাদের সহযোগিতা করা উচিত। এ জন্য এবার ব্যবসায়ী, নগরের সচেতন নাগরিকসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে-সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক ও সাবেক মেয়র মাঠ পরিদর্শনের পর কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ মতো হকার্স মার্কেট মাঠকে প্রস্তুত করা হবে। এজন্য ১০-১২ দিন সময় লাগতে পারে। মাঠ প্রস্তুতের পর খোলা জায়গায়ই হকারদের পুনর্বাসন করা হবে। ইতিমধ্যে বিষয়টি হকারদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার রোববার বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, মাঠের সুযোগ-সুবিধা আগে থেকেই ছিল। সেগুলোকে এক্টিভ করা হবে। একইসঙ্গে মাঠের কিছু কাজ করতে হবে। এসব নিয়ে এখন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে কাজ শেষ করা হয় সে নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ফিরে দেখা -দায়িত্ব নিয়েই অভিযানে গিয়ে যা বললেন সিলেটের নতুন ডিসি সারোয়ার

দায়িত্ব গ্রহণ করেই সাদাপাথরে ছুটে গেলেন সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম। পথিমধ্যে তিনি হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে অভিযানে নামেন।

বীভৎস, বিবর্ণ সাদাপাথরের দৃশ্য অবলোকনের পর জেলা প্রশাসক বলেন, কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথরকে আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি সাদাপাথর পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো ঘুরে দেখেন এবং পাথর প্রতিস্থাপনের কাজ তদারকি করেন।

এ সময় নবাগত জেলা প্রশাসক সারোয়ার আলম বলেন, সাদাপাথর থেকে যাতে আর কোনো পাথর চুরি না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি কারা এই লুটের সঙ্গে জড়িত, কেন এবং কিভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে- তা খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি আরও বলেন, জনগণই প্রশাসনের শক্তি, ইতোমধ্যেই জনগণ এ লুটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে গত সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে পূর্ববর্তী জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি করা হয়। একই দিন আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমকে সিলেটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বুধবার রাতে সারোয়ার আলম সিলেটে যোগদান করেন এবং বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই সাদাপাথরে গিয়ে তিনি সরেজমিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।

 

মানব জমিন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল