বাচ্চা লোক তালিয়া বাজাও ! পীর সাহেবরা আল্লার ওয়াস্তে আপনাদের কু ত্তাদের থামান…

প্রকাশিত: ৫:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

বাচ্চা লোক তালিয়া বাজাও ! পীর সাহেবরা আল্লার ওয়াস্তে আপনাদের কু ত্তাদের থামান…

বাচ্চা লোক তালিয়া বাজাও ! পীর সাহেবরা আল্লার ওয়াস্তে আপনাদের কু ত্তাদের থামান…

সিলেটে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার : অবৈধ ব্যাটারি রিকশাই খাচ্ছে ২০ ভাগ! সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে!

ডেস্ক রিপোট

 

সিলেট নগরীর প্রতিটি ঘরে যখন বিদ্যুতের জন্য হাহাকার, তখন শহরের রাস্তায় চলছে হাজার হাজার ব্যাটারি চালিত রিকশা। এই রিকশাগুলো প্রতিদিন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, তা নগরের বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় এক-পঞ্চমাংশের সমান।

 

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে তার একটি লেখায় উল্লেখ করেন, সিলেট শহরে বর্তমানে প্রায় তিন লাখ পরিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। অন্যদিকে, প্রায় ৪০ হাজার ব্যাটারি রিকশা প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ খরচ করছে। প্রতিটি রিকশা গড়ে ৪ থেকে ৫ কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। এই পরিমাণ বিদ্যুতের দ্বারা প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার পরিবার আলো জ্বালাতে পারত।

 

গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিলেটে লোডশেডিংও বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিলেট নগরী ও আশপাশের এলাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সিলেট বিভাগীয় অফিস জানায়, হঠাৎ বেড়ে যাওয়া চাহিদা এবং কম উৎপাদনের কারণে সারাদেশের মতো সিলেটেও লোডশেডিং পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহের সংকটের কারণে দিনে-রাতে একাধিকবার বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। পিডিবি আশা করছে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

 

পিডিবির সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ২৪৩ মেগাওয়াট। সিলেট জেলায় ১৫০ মেগাওয়াট। আর নগরীতে গড়ে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট। সে হিসেবে সারা মাসে ৪০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা যে বিদ্যুৎ খরচ করে তা দিয়ে পুরো সপ্তাহ নগরীকে কোন ঘাটতি ছাড়াই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হতো।

 

এদিকে, পুলিশ অভিযানে নেমেছে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধ করতে। সিলেট নগরীতে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে শতাধিক যানবাহন আটক ও মামলা করা হয়েছে। গত বুধবার অভিযানের তৃতীয় দিনে ৬৯টি যানবাহন আটক করা হয়, যার মধ্যে ব্যাটারি চালিত রিকশার সংখ্যা ছিল সর্বাধিক—মোট ৪৪টি। এছাড়া আটক করা হয় সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, পিকআপ, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি।

 

অভিযানের অংশ হিসেবে নগরীর শামীমাবাদ এলাকায় পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ১১টি গ্যারেজের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ১৪৫ ফুট বৈদ্যুতিক তার, ১৮০টি চার্জিং পয়েন্ট ও ১০টি অবৈধ মিটার।

 

তবে রিকশা চালকরা দাবি করেন, পারমিট না দিয়ে রিকশা আটক ও মামলা দিয়ে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচার পথ বন্ধ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ‘সিলেট ব্যাটারী চালিত রিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

 

রিকশাচালকদের দাবি, এসব রিকশা বন্ধ হলে তারা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে না খেয়ে মারা যাবেন। তাদের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই অটোরিকশা। সিলেটে কর্মসংস্থানের যথেষ্ট অভাবের কারণে তারা অটোরিকশা নিয়ে নেমেছেন। এখন এটাও বন্ধ হয়ে গেলে তারা কি করবেন? কিভাবে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেবেন? তারা মনে করেন প্রশাসনের উচিত পুরোপুরিভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে কিভাবে এই ৪০ হাজার রিকশা ও চালকদের কাজে লাগানো যায় তার উপায় খুঁজে বের করা।

 

অপরদিকে সিলেটবাসী মনে করছেন, বিদ্যুতের এই সংকটের সমাধান না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া নগরবাসীর দৈনন্দিন জীবন ও ব্যবসা-পরিচালনায় বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তারা মনে করছেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা, টমটম- এগুলো বন্ধ হলে নগরবাসীর বিদ্যুতের অভাব অনেকটাই কমে আসবে। পাশাপাশি ৪০ হাজার মানুষের জীবিকার বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত।

 

সৌজন্য-সিলেটভিউ২৪ডটকম/সানি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল