সিলেটের পর্যটন বিকাশে যত বাধা ! সাথে আছে তেলবাজ!ধান্দাবাজ মূর্খ ও বেটি চো×রা সাংবাদিক গং

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

সিলেটের পর্যটন বিকাশে যত বাধা ! সাথে আছে তেলবাজ!ধান্দাবাজ মূর্খ ও বেটি চো×রা সাংবাদিক গং

সিলেটের পর্যটন বিকাশে যত বাধা ! সাথে আছে তেলবাজ!ধান্দাবাজ মূর্খ ও বেটি চো×রা সাংবাদিক গং

ডেস্ক রিপোট

পাহাড়, ঝর্ণা, নদী, হাওর, অরণ্য, চা বাগান কিংবা জলারবন- কী নেই সিলেটে! প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি সিলেট। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য্য আর বৈচিত্রতার কারণে পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্থান সিলেট। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে কমছে পর্যটকদের আগমন।

করোনার প্রকোপের পর কয়েদফা বন্যা- প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগ ছাড়াও মানবসৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকার কারণে সিলেটে আশানুরুপ পর্যটক সমাগম হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

ভাঙাচোরা সড়ক, অনুন্নত অবকাঠামো, নিরাপত্তাহীনতা, পরিকল্পনা ও প্রচারের অভাব, দক্ষ জনশক্তি না থাকাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পর্যটন বিকাশে অন্যতম বাধা বলে করেন এই খাতের সংশ্লিস্টরা। এছাড়া অবাধে বালু ও পাথর লুটপাটে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর সৌন্দর্যহানির কারণেও কমছে পর্যটক।

এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ভাঙাচোরা সড়ক

২০২২ ও ২৪ সালে কয়েকদফা বন্যা হয় সিলেট। সেই বন্যার ক্ষত এখনও রয়ে গেছে সিলেটের বেশিরভাগ সড়কে। নগরসহ সিলেটের পর্যটনকেন্দগুলোর বেশিরভাগ সড়কই ভাঙাচোরা।

সিলেটের অন্য দুটি পর্যটন কেন্দ্র বিছনাকান্দি ও রাতারগুল জলারবন। এই দুই স্থানে যাওয়ার সড়কই ভাঙাচোরা। ফলে এসব স্থানে ভোগান্তিতে পড়ছেন পর্যটকেরা।

পর্যটন স্পট বিছনাকান্দির দূরত্ব সিলেট থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার। এ দূরত্বের গোয়াইনঘাট উপজেলার বঙ্গবীর রোড থেকে হাদারপাড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। বন্যায় সড়কের পিচ উঠে বড় বড় গর্তেও সৃষ্টি হলেও তা এখন পর্যন্ত সংস্কার হয়নি।

জলারবন খ্যাত রাতারগুলের দুরত্ব সিলেট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার। এ সড়কের পাঁচ কিলোমিটার অংশই ভাঙাচোরা। এ ছাড়া ওই সড়কের চানুপুর থেকে মোটরঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক কাঁচা। এতে বৃষ্টির দিনে পর্যটকদের যাতায়াতে চরম সমস্যা হয়। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা আর লেগুনা ছাড়া কোনো গাড়িই যেতে চায় না রাতারগুল ও বিছনাকান্দিতে।

চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের বিছানাকান্দিতে বেড়াতে আসা সাদমান সাকিব বলেন, সিলেটের প্রকৃতি খুবই সুন্দর। পাহাড়, নদী, হাওর, ঝর্ণা, বন- সবই আছে এখানে। কিন্তু নগর থেকে পর্যটনস্পটগুলোতে আসার সড়কগুলো ভয়াবহ রকমের খারাপ। এই সড়কগুলোই সিলেটের পর্যটনের ‘পথের কাটা’ হয়ে আছে। এসব সড়ক দিয়ে কেউ একবার আসলে আর কোনোদিন আসতে চাইবে না।

নেই অবকাঠামো
সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ। এখানকার সাদাপাথরের পাথুরে নদীতে গা এলিয়ে দিতে প্রচুর পর্যটক আসেন। সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কও অপেক্ষাকৃত ভালো। তবে সাদাপাথরে পর্যটকদের জন্য ওয়াশ রুম, চেঞ্জ রুমসহ অবকাঠামোগত কোন সুবিধা। বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রে নেই এমন সুবিধা।

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালি বিভাগের প্রভাষক মো. আব্দুল হালিম বলেন, সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রে কোন বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুম নেই। এতে পর্যটকরা এসব স্থানে এসে বিপাকে পড়েন। কেবল পর্যটন এলাকায় নয়, ওইসব স্থানে যাওয়ার পথেও ওয়াশরুম নির্মাণ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে কোন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নেই। ফলে পর্যটকরা অনেক সময় পর্যটন এলাকা নোংরা করে ফেলেন। পর্যটন শিল্পের বিকাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও জরুরী।

তবে অবকাঠামো গড়ে তোলার নামে যাতে পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করা না হয় সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সহ-সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুর ইসলাম শাহীন।

তিনি বলেন, রাতারগুল জলারবন একটি বিশেষ প্রকৃতির বন। অথচ এই বনের ভেতরে বনবিভাগ পর্যটক আকর্ষের নামে ওয়াচ টাওয়ার নির্মণ করেছে। যা কেবল অপ্রয়োজনীয় নয়, বনের চরিত্রবিরোধীও। বন, হাওরের উন্নয়ন হবে স্থাপনাবিহীন।

তিনি বলেন, বন ও হাওরের মধ্যে ইঞ্জিন নৌকা চলাচলও বন্ধ করা দরকার। সিলেট অঞ্চলে বারকি নৌকা নামে হাতে টানা একধরণের বিশেষ নৌকা রয়েছে। এটা সিলেটের ঐতিহ্যও। পর্যটক চলাচলে এসব নৌকা ব্যবহার করা যেতে পারে।

পরিবহনখাতে অব্যস্থাপনা ও নিরাপত্তাহীনতা
সিলেটে পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণেও পর্যটকদের দুর্ভোগে পরতে হয়। এপসভিত্তিক পরিবহন সেবা এখানে জনপ্রিয় না হওয়ায় পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত ভাড়া হাকান চালকরা। পর্যটকদের কাছ থেকে মাঝিরা নৌকা ভাড়াও বাড়তি রাখেন বলে অভিযোগ আছে।

হাওর পর্যটন নিয়ে গবেষণা করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমদাদুল হক বলেন, সিলেটে পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। এখানকার চালকরা সিলেটে মানুষ না হলে ভাড়া বেশি রাখেন। এছাড়া ভাড়া গাড়ি নেওয়ার মতো কোন কাউন্টার বা টিকিটের ব্যবস্থা নেই। ফলে যাত্রীদের যেমন বাড়তি ভাড়া গুণতে হয় তেমনি নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় থাকতে হয়।

সিলেটের বিভিন্ন পর্যটকনকেন্দ্রে পর্যটকদের কাছ থেকে নৌকা ভাড়া বাড়তি রাখা হয় জানিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বলেন, বিভিন্ন এলাকার নৌকাভাড়া প্রশাসন থেকে নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। ওইসব এলাকায় চলাচলকারী নৌকাগুলিকেও নিবন্ধন ও নজরদারির আওতায় আনা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, প্রতিবছর জাফলং ও লালাখালে পানিতেডুবে অনেক পর্যটক মারা যান। প্রতিবছর এমন ঘটনা ঘটলেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। পর্যটন পুলিশ বলে পুলিশেষর একটি বিশেষ ইউনিট থাকলেও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তাদের তেমন কার্যক্রম চোখে পরে না।

লুটপাটে মলিন পর্যটনকেন্দ্র
সিলেটে আসা পর্যটকদের কাছে প্রধান দুটি আকর্ষনীয় স্থান গোয়াইনঘাটের জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর। অথচ এ দুটি জায়গাই এখন লুটপাটকারীদের অভয়রান্য। গত বছর ৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পর থেকে পাথর লুটে নিয়ে মরুভূমিতে পরিণত করা হয় সাদাপাথরকে। একই অবস্থা জাফলংয়েরও। এই দুই স্থানেই চলছে অবাধে বালি লুট। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে লুটপাট কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি।

লুটপাটের কারণে সৌন্দর্য হারিয়েছে এসব পর্যটন এলাকা। ফলে কমেছে পর্যটক

প্রচারের অভাব, তথ্যের দুস্প্রাপ্যতা
পর্যটকদের জন্য সিলেট অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান হলেও তার তেমন প্রচার বা ব্র্যান্ডিং নেই বলে মনে করেন সংশ্লিস্টরা। এছাড়া সিলেটে এলে কোথায় কিভাবে ঘুরে বেড়ানো যবে এনিয়ে সঠিক তথ্যও একস্থান থেকে পাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।

ধর্মীয় পর্যটন বিশ্বজুড়েই সমাদৃত। সিলেটে এর বড় সুযোগ রয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো রক্ষা করতে হবে। প্রত্মততত্ত্ব রক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সহ-সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুর ইসলাম শাহীন বলেন, ধর্মীয় পর্যটন সারাবিশ্বেই পর্যটনের অন্যতম একটি শাখা। সিলেটেও এর সুযোগ ছিলো। কিন্তু প্রচারের অভাবে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এখানে শাহজালাল (র.) শাহপরান (র.) সহ ৩৬০ আওলিয়ার মাজার রয়েছে। শ্রীচৈতন্যের পিতৃভ’মি রয়েছে। কিন্তু এগুলো কোথায় অবস্থিত, কোনটি কি বৈশিষ্ট তা নিয়ে কোন প্রচারণা নেই।

তিনি বলেন, নগরের চাষনী পীর এলাকার মাজারে প্রচুর সংখ্যক বানর রয়েছে। এটি ভালোভাবে প্রচার করা হলে সিলেটে আসা পর্যটকরা বানর দেখার জন্য সেখানে যেতেন।

শাহীন বলেন, সিলেটে অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও প্রত্মতাত্ত্বিক নির্দশন রয়েছে। এগুলো সংরক্ষণ ও ভালোভাবে ব্র্যান্ডিং করা গেলেও অনেক পর্যটক আসতেন। সিলেটে এর বড় সুযোগ রয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো রক্ষা করতে হবে। প্রত্মততত্ত্ব রক্ষা করতে হবে।

পর্যটকদের জন্য আলাদা একটি তথ্য বাতায়ন গড়ে তোলা প্রয়োজন জানিয়ে সিলেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য ট্রাস্টের সভাপতি ডা. শাহ জামান মোস্তফা বাহার বলেন, সিলেটে যারা বেড়াতে আসেন তারা কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, এখানে ঘুরে দেখার মতো কি কি আছে এসব ব্যাপারে একজায়গা থেকে তথ্য পাওয়ঢার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটকদের বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞেস করে ঘরে বেড়াতে হয়। এতে তারা অনেক সময় বিপত্তিতে পরেন। সরকারি তরফ থেকে পর্যটকদের তথ্য প্রদানের একটি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

দক্ষ জনশক্তির অভাবও সিলেটের পর্যটন বিকাশের অন্যতম বাধা বলে মনে করেন সিলেট ক্যটারার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবলু। তিনি বলেন, এখানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালিটি, রেস্টুরেন্ট, ট্যুর অপারেটর বা ট্যুর গাইড হিসেবে দক্ষ মানুষজন পাওয়া যায় না। এসবখাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন।

 

 

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ । ২৭ টি মনোরম জায়গা । বাইকবিডি

This page was last updated on 08-Aug-2025 12:00am , By Ashik Mahmud Bangla

 

আরও দেখুন

 

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট
রাতারগুল জলাবন
Ratargul Swamp Forest
মায়াবী ঝর্ণা
লোভাছড়া
লালা খাল
লক্ষণছড়া
সেরা ট্যুর প্যাকেজ
জাফলং জিরো পয়েন্ট

 

রাতারগুল জলাভূমির বন

 

আমাদের বাইকারদের কাছে সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো খুব প্রিয়। সিলেটে দর্শনীয় স্থান এর কোন কমতি নেই। তাই একটু সময় পেলে আমরা বাইকাররা সিলেটে ছুটে যেতে চায়। আজ আমরা সিলেটের সব দর্শনীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করবো।

চা বাগান, জাফলং, রাতারগুল জলাবন, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, তামাবিল, পাহাড়, ঝর্ণা সব মিলিয়ে নানা বৈচিত্রের সম্ভার এই সিলেট দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই প্রাচীন জনপদ বনজ, খনিজ ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত।

Dibir Haur

 

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ । ২৭ টি মনোরম জায়গা । বাইকবিডি

১/ ডিবির হাওরঃ ( dibir haor sylhet )

সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি মেঘালয়ের পাদদেশে ঝর্ণা বেষ্টিত ডিবির হাওর লাল শাপলার বিল নামে পরিচিত। আমাদের জাতীয় ফুল লাল শাপলার বিল ডিবির হাওর। প্রতিবছর অসংখ্য পাখি আসে এই ডিবির হাওরে। ভোরের লাল শাপলা,পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্যে, সাথে পাখির কিচির মিচির এ যেন আসলেই এক প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য।

অপরূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ইতিহাস। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসিত ভারত উপমহাদেশের শেষ স্বাধীন রাজ্য ছিল জৈন্তাপুর। শ্রীহট্ট ভারতবর্ষের অধিকাংশ এলাকা তখন মোঘলসাম্রাজ্যের ছিলো। তখন জৈন্তিয়া তার পৃথক ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছিল। প্রায় ৩৫ বছর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে পরিচালিত হয়।

কিভাবে ডিবির হাওর যাওয়া যায়?

ডিবির হাওরে যেতে সবার প্রথমে আপনাকে বাইক নিয়ে চলে আসতে হবে সিলেট নগরীতে। সেখান থেকে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে জাফলং এর দিকে। জৈন্তাপুর বাজার রাস্তার বিজিবি ক্যাম্প লিখা সাইনবোর্ডের ডান পাশের রাস্তা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট এগিয়ে গেলে পেয়ে যাবেন ডিবির হাওর । আপনি যদি এই শাপলার বিলের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই খুব ভোরে যেতে হবে।

Hakaluki-Haor

Also Read: বাংলাদেশের সেরা সব হাওর

২/ হাকালুকি হাওরঃ ( hakaluki haor )

হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের বৃহত্তর হাওর। এটি মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলায় অবস্থিত। হাকালুকি হাওরের আয়তন ১৮১.১৫ বর্গ কিমি। হাওরটি ৫টি উপজেলা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে বিস্তৃত। হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৩৮টি বিল রয়েছে। হাকালুকি হাওরে প্রচুর পরিমাণ মৎস্য সম্পদ রয়েছে। হাওরের বিলগুলি অনেক প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক আবাস। হাকালুকি হাওরের বিলগুলিতে বিভিন্ন জাতের বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।

Also Read: ছোট বাইক এ দূরপাল্লাঃ সিলেট ভ্রমন

কিভাবে হাকালুকি হাওর যাওয়া যায়? হাকালুকি হাওর যেতে আপনাকে সবার প্রথমে ফেঞ্চুগঞ্জ সদর যেতে হবে। ফেঞ্চুগঞ্জ সদর থেকে ঘিলাছড়া জিরোপয়েন্ট যেতে হবে। সদর থেকে দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: এপ্রিল-অক্টোবর পর্যন্ত এই হাওরে ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।

Lalakhal

৩/ লালাখালঃ ( lala khal sylhet )

মেঘালয় পর্বত শ্রেনীর সবচেয়ে পুর্বের অংশ জৈন্তিয়া হিলসের ঠিক নীচে পাহাড়, প্রাকৃতিক বন, চা বাগান ও নদীঘেরা একটি গ্রাম লালাখাল, সিলেট জেলার জৈন্তিয়াপুর উপজেলায় অবস্থিত। লালাখাল থেকে সারীঘাট পর্যন্ত নদীর ১২ কি.মি পানির রঙ পান্না সবুজ হয়ে থাকে।

পুরো শীতকাল এবং অন্যান্য সময় বৃষ্টি না হলে এই রঙ থাকে। জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারনেই এই নদীর পানির রঙ এরকম দেখায়। এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন।

কিভাবে লালা খাল যাওয়া যায়?

সারী ব্রীজ় পেরিয়ে একটু সামনেই রাস্তার মাঝখানে একটি পুরনো স্থাপনা। এর পাশ দিয়ে হাতের ডানের রাস্তায় ঢুকে ৭ কি.মি গেলে লালাখাল।

Ratargul

৪/ রাতারগুল: ( ratargul swamp forest )

রাতারগুল জলাবন বা রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট (Ratargul Swamp Forest) বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সারা পৃথিবীতে স্বাদুপানির জলাবন আছে মাত্র ২২টি।

ভারতীয় উপমহাদেশে আছে দুটি। একটি শ্রীলংকায়, আরেকটি বাংলাদেশের রাতারগুল। সুন্দর বিশাল এ বনের তুলনা চলে একমাত্র আমাজনের সঙ্গে। আমাজনের মতো এখানকার গাছ বছরে ৪ থেকে ৭ মাস পানির নিচে থাকে। এই বন মূলত প্রাকৃতিক বন হলেও পরবর্তিতে বাংলাদেশ বন বিভাগ, বেত, কদম, হিজল, মুর্তাসহ নানা জাতের জলসহিষ্ণু গাছ লাগিয়েছে।

এছাড়া জলমগ্ন এই বনে রয়েছে হিজল, করচ আর বরুণ গাছ, আছে পিঠালি, অর্জুন, ছাতিম, গুটি জাম, আছে বট গাছও। এই বনে সাঁপের আবাস অনেক বেশি। এছাড়া রয়েছে বানর, গুঁইসাপ, সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিল এবং বাজপাখি।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়ঃ বছরের যেকোন সময়ে আপনি এখানে ঘুরতে যেতে পারেন। তবে বর্ষাকালে এর প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায়।

কিভাবে রাতারগুল যাওয়া যায়?

ঢাকা হতে বাইক নিয়ে আপনাকে সবার আগে সিলেট যেতে হবে। সেখান থেকে যেতে হবে কদমতলী বাস স্ট্যান্ড। কদমতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে রাতারগুলের দূরত্ব ২৬ কি.মি.।Bishnakandi

৫/ বিছনাকান্দিঃ ( bisnakandi )

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিছনাকান্দি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে খাসিয়া পাহাড়ের অনেকগুলো ধাপ দুই পাশ থেকে এক বিন্দুতে এসে মিলেছে। পাহাড়ের খাঁজে রয়েছে সুউচ্চ ঝর্ণা।

এই স্পটের মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানি প্রবাহ। পূর্ব দিক থেকে পিয়াইন নদীর একটি শাখা পাহাড়ের নীচ দিয়ে চলে গেছে ভোলাগঞ্জের দিকে। পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর পাথরের এক সম্মিলিত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই বিছনাকান্দি।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: বর্ষায় বিছনাকান্দি ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

কিভাবে বিছনাকান্দি যাওয়া যায়?

সিলেট থেকে কোম্পানীগঞ্জ রোডে সালুটিকর, সালুটিকর থেকে এগিয়ে ডানে মোড় নিয়ে বঙ্গবীর। বঙ্গবীর থেকে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হাদারপাড় বাজার। হাদারপাড় বিছনাকান্দির একেবারে পাশে।

Bholaganj

৬/ ভোলাগঞ্জঃ ( volagonj sylhet )

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারীর অবস্থান। মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে বর্ষাকালে ঢল নেমে আসে। ধলাই নদীতে ঢলের সাথে নেমে আসে পাথর, পরবর্তী বর্ষার আগমন পর্যন্ত চলে পাথর আহরণ। এখান থেকে ২০ মিনিটের ইঞ্জিন নৌকা দূরত্বে রয়েছে বিশেষ কোয়ারী’র অবস্থান। মূলত সীমান্তের অতি নিকটবর্তী হওয়ায় এই জায়গাকে বিশেষ কোয়ারী বলা হয়। সেখানে থেকে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য প্রাণ ভরে উপভোগ করা যায়।

চেরাপুঞ্জির নিচেঃ পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল এলাকা চেরাপুঞ্জির অবস্থান ভারতের পাহাড়ী রাজ্য মেঘালয়ে। ধলাই নদীর উজানে এ রাজ্যের অবস্থান। খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় ঘেরা এ রাজ্যের দৃশ্য বড় মনোরম। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকায় অবস্থান করে পাহাড় টিলার মনোরম দৃশ্যাবলি দেখা যায়। বর্ষাকালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি ধলাই নদীতে পাহাড়ী ঢলের সৃষ্টি করে।

ভোলাগঞ্জ রোপওয়েঃ ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে নেমে আসা ধলাই নদীর সাথে প্রতিবছর বর্ষাকালে নেমে আসে প্রচুর পাথর। ধলাই নদীর তলদেশেও রয়েছে পাথরের বিপুল মজুদ। ১৯৬৪-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে প্রকল্প। মজার ব্যাপার হলো এলাকাটি দেখতে অনেকটা ব-দ্বীপের মতো।

ভোলাগঞ্জ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনঃ ভোলাগঞ্জে রয়েছে একটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন। এ স্টেশন দিয়ে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চলে। এ স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা প্রধানত চুনাপাথর আমদানী করে থাকেন। চুনাপাথর নিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তের জিরো লাইনে এ কাস্টমস স্টেশনের অবস্থান। চুনাপাথর আমদানির দৃশ্য অবলোকনের বিষয়টিও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।

1655016708686

৭/ লোভাছড়াঃ ( lova chora sylhet )

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তের বড় বড় সবুজ পাহাড় ছুঁয়ে নেমেছে ঝর্ণা। আর ঝাঁপিয়ে পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তে। চারদিকে সবুজ বেষ্টিত চা-বাগান, সারি সারি গাছ, পাহাড় আর বালুসমৃদ্ধ স্বচ্ছ পানির বহমান নদী। অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অনন্য রূপ হচ্ছে লোভাছড়া। লোভাছড়া মূলত একটি নদী।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত ঘেঁষা খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে বয়ে চলছে অপূর্ব স্বচ্ছধারার এ লোভাছড়া। সবুজ পাহাড়, নীলাকাশ ও স্বচ্ছ পানি নিয়ে ভিন্নমাত্রার এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে লোভাছড়ায় ও নদীর চারদিকে। নীলাকাশে বক আর বিভিন্ন পাখির ওড়াউড়ি, জেলেদের মাছধরা ও দুই পাশে কৃষকের কর্মব্যস্ততা, কিশোর-কিশোরী আর খাসিয়া রমণীদের জলক্রীড়ায় মাতিয়ে তোলা অপূর্ব পরিবেশের মায়াজালে বারবার কাছে টানবে লোভাছড়া ভ্রমণ।

শীতের নীলাকাশের ক্ষণে ক্ষণে রূপ পাল্টিয়ে চোখ ঝলসিয়ে দেবে। চা বাগানের কাছে পোষা হরিণ ও হাতির চলাচল আর সকালের বন মোরগের ডাক ও একটু দূরের সবুজ খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড় ও পাথর উত্তোলনের কার্যক্রমে মোহনীয় পরিবেশ মাতাল করছে লোভাছড়া চা-বাগান সংলগ্ন অনুপম দৃশ্য।

কিভাবে লভাছড়া যাওয়া যায়?

প্রথমে সিলেটে আসতে হবে। এরপর জাফলং রোড ধরে চলে আসতে হবে কানাইঘাট বাজার পর্যন্ত। লঞ্চঘাট থেকে তারপর আপনাকে নৌকায় করে যেতে হবে।

Struggle fund-fountain

৮/সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণাঃ ( songrampunji waterfall )

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার আরেক নাম মায়াবী ঝর্ণা। ভারতের সীমান্তে অবস্থিত এ মায়াবী ঝর্ণাটিতে যেতে জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। বিএসএফের প্রহরায় বাংলাদেশীরা সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখতে যেতে পারে। পাহাড়ের গা বেয়ে ঝরনার জল জমে পুকুরের মতো সৃষ্টি হয়েছে। এই ঝর্ণার রয়েছে মোট তিনটি ধাপ। ঝর্ণার তৃতীয় ধাপে রয়েছে একটি সুড়ঙ্গ, আর সুড়ঙ্গ পথের শেষ এখন পর্যন্ত অজানা।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: বর্ষাকালে ঝর্ণাতে বেশি পানির দেখা মিলে তাই বর্ষাকালই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখার উপযুক্ত সময়।

কিভাবে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা যাওয়া যায়?

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণায় যেতে হলে আপনাকে জাফলং আসতে হবে। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে আপনি সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা যেতে পারবেন।

Panthumai-Fountain

৯/ পান্থুমাই ঝর্ণাঃ ( panthumai )

পান্থুমাই ঝর্ণা বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত মেঘালয় পাহাড়ের কোল ঘেঁষা একটি অপূর্ব গ্রামের নাম। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের এই গ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম।

মেঘালয় পাহাড় আর পিয়াইন নদীর পাড়ে অবস্থিত এই গ্রামে আছে অপরূপ নিদর্শন পান্থুমাই ঝর্ণা। কেউ একে বলেন ফাটাছড়ির ঝর্ণা আবার কেউ আবার ডাকেন বড়হিল ঝর্ণা। এই ঝর্ণার মূল অবস্থান ভারতে হওয়া পরও ১০০ টাকায় ছোট ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া করে ঝর্ণার বেশ কাছে যাওয়া যায়।

পান্থুমাই ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় : বর্ষাকাল ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়,কারন তখন চারদিকে প্রচুর পানি থাকে।

1655016741007

১০/ লক্ষনছড়াঃ ( lokkhon chora sylhet )

লক্ষনছড়া (Lokkhonchora) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলাস্থ পান্থুমাই ঝর্ণার কাছে অবস্থিত একটি দর্শনীয় স্থান। আপনার ভ্রমণ তালিকায় যদি পান্থুমাই ঝর্ণা থাকে তবে পান্থুমাই হতে সহজেই লক্ষনছড়া ঘুরে আসতে পারেন। আপনি চাইলে বিছনাকান্দি, পান্থুমাই ঝর্ণা এবং লক্ষণছড়া একসাথে একদিনে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। গ্রামের ভিতর দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষে মিনিট বিশেক হাটার পর লক্ষনছড়া পৌঁছে যাবেন।

অনেকটা বিছনাকান্দির রুপে রঙিন লক্ষনছড়ায় ভারতের ঝর্ণা থেকে সৃষ্ট পাথুরে ঝিরিপথ রয়েছে। ভারতীয় সীমানায় চলাচলের জন্য তৈরি ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়া ঝিরিপথটি দেখতে অনেক চমৎকার লাগে। আর ভরা বর্ষায় লক্ষনছড়ার এই সৌন্দর্য আরো অতুলনীয় হয়ে উঠে।

Jaflong

১১/ জাফলংঃ ( jaflong )

জাফলং প্রকৃতির কন্যা হিসাবে আমাদের সবার কাছে পরিচিত। সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে জাফলং আমার অনেক পছন্দের। সিলেট এর গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা এই জাফলং।

সিলেট থেকে জাফলং এর দুরত্ব মাত্র ৬২ কিলোমিটার। পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলংকে করেছে সবার কাছে প্রিয়। একেক ঋতুতে জাফলং একেক রকম রুপের প্রকাশ করে।

কিভাবে জাফলং যাওয়া যায়?

জাফলং যেতে হলে আপনাকে আসতে হবে সিলেটে। ঢাকা থেকে সিলেট এর দূরত্ব ২৪০কিলোমিটার। সিলেট পৌঁছাতে সাধারণত লাগে ৬ ঘন্টার মত। সিলেটে থেকে আপনি চলে আসতে পারবেন জাফলং।

Tamabil

১২/ তামাবিলঃ ( tamabil sylhet )

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এক স্থানের নাম তামাবিল (Tamabil)। সিলেট-জাফলং রোড ধরে এগিয়ে যেতে থাকলে জাফলংয়ের ৫ কিলোমিটার পুর্বে তামাবিলের দেখা মিলবে।

সিলেট জেলা থেকে তামাবিলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। তামাবিল মূলত বাংলাদেশের সিলেট এবং ভারতের শিলং মধ্যকার সীমান্ত সড়কের একটি বর্ডার। তামাবিল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়, ঝর্ণা সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখা যায়।

কিভাবে তামাবিল যাওয়া যায়ঃ তামাবিল যেতে চাইলে প্রথমে চায়ের দেশ সিলেটে আসতে হবে। সিলেট থেকে জাফলং রোড ধরে এগিয়ে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন তামাবিল।

1655016800914

১৩/ জিতু মিয়ার বাড়ীঃ ( jitu miah bari sylhet )

সিলেটের শেখঘাটে কাজীরবাজার সেতুর উত্তরে সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান ঐতিহাসিক জিতু মিয়ার বাড়ী (Jitu Miah’r Bari) অবস্থিত। ১ দশমিক ৩৬৫ একর জায়গা জুড়ে খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতু মিয়া মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন।

খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতু মিয়া সাব রেজিস্টার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করলেও ১৮৯৭ থেকে ১৯০৩ সাল পযর্ন্ত সিলেট পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান এবং অনারারী ম্যাজিস্টেট ছিলেন। তৎকালীন সময়ে জিতু মিয়ার পরিবারের জাকঁজমকপূর্ণ বিলাসী জীবনযাপন সিলেটে ব্যাপকভাবে আলোচিত হত।

কথিত আছে, সে সময় এই বাড়ীর ড্রয়িংরুমে তুরস্কের পাশা, রুশ তুরস্কের যুদ্ধ, ব্রিটিশ রাজ পরিবারের রাজপুরুষদের বিভিন্ন আলোকচিত্র শোভা পেত। আর প্রতিদিন সিলেটে আগত শত শত লোক জিতু মিয়ার বাড়িতে আতিথেয়তা গ্রহণ করতেন।

কিভাবে জিতু মিয়ার বাড়ী যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে সিলেট আসতে হবে। আপনি সিলেট শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে জিতু মিয়ার বাড়ি আসতে পারবেন।

Ali-Amjad's-clock

১৪/ আলী আমজদের ঘড়িঃ ( ali amjad’s clock )

সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত আলী আমজদের ঘড়ি (Ali Amjader Ghari) ঊনবিংশ শতকের নির্মিত সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার আলী আহমদ খান ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে ক্বীন ব্রীজের পাশে এই ঐতিহাসিক ঘড়িঘর নির্মাণ করেন।

আলী আহমদ খানের ছেলের নামানুসারে ঘড়িঘরটি আলী আমজদের ঘড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে। ঘড়ির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাচীন এই ক্ষতিগ্রস্থ হইয়েছিলো। এরপর বিভিন্ন সময়ে ঘড়িটি সংস্কার করা হয়।

কিভাবে আলী আমজদের ঘড়ি যাওয়া যায়?

সিলেট শহরের যেকোন স্থান থেকে ক্বীন ব্রীজ সংলগ্ন আলী আমজদের ঘড়ি দেখতে যাওয়া যায়। সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশন ও কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হতে আলী আমজাদের ঘড়ি মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

kin-bridge

১৫/ ক্বীন ব্রীজঃ ( keen bridge )

বাংলাদেশের সিলেটের কেন্দ্রস্থল দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদী। আর সুরমা নদীর উপর সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান লৌহ নির্মিত সেতুর নাম ক্বীন ব্রীজ (Keane Bridge)। সিলেট শহরের “প্রবেশদ্বার” খ্যাত এই স্থাপনাটি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে সকলের কাছে অত্যন্ত সুপরিচিত।

১৯৩৬ সালে এই ব্রীজ নির্মান করা হয়। ক্বীন ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৩৫০.৫২ মিটার এবং প্রস্থ ৫.৪ মিটার। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী বাহিনী ডায়নামাইট দিয়ে ব্রীজের একাংশ উড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগিতায় ব্রীজটির বিধ্বস্ত অংশ পুনঃনির্মাণ করা।

কিভাবে ক্বীন ব্রীজ যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সড়ক পথে ক্বীন ব্রীজের দূরত্ব প্রায় ২৪৬ কিলোমিটার । সিলেট শহরের যেকোন স্থান থেকে ক্বীন ব্রীজ যাওয়া যায়। সিলেট রেলওয়ে স্টেশন হতে ক্বীন ব্রীজ মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

Shrimangal

১৬/ শ্রীমঙ্গলঃ ( sreemangal )

চায়ের রাজধানী খ্যাত এই অঞ্চল বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত একটি উপজেলা। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের অন্তর্গত। পাহাড়, রেইন ফরেস্ট, হাওর আর সবুজ চা বাগান রয়েছে এ অঞ্চলে। শ্রীমঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে চা বাগান। দেশের ১৬৩টি চা বাগানের মধ্যে এ উপজেলায় ৪০ টি চা বাগান।

তাছাড়াও রাবার, লেবু ও আনারস চাষ হয় শ্রীমঙ্গলে। পাহাড় ও ঘন বনাঞ্চল এলাকায় বৃষ্টিপাত বেশি হয়, এজন্য শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর মধ্যে রয়েছে কালাপুর ইউনিয়নের গ্যাসক্ষেত্র, শ্রীমঙ্গলের বালিতে খনিজ পদার্থ জাতীয় সিলিকা বালি, মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র।

আপনি জানেন কি, ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন গভীর রাতে মাগুরছড়া গ্যাসকূপে ড্রিলিংয়ের সময় অগ্নিবিস্ফোরণে আশপাশের খাসিয়াপুঞ্জি, চা বাগান, রেললাইন, সবুজ বনাঞ্চল সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই গ্যাসকূপটি এখন পরিত্যক্ত এবং সংরক্ষিত এলাকা। এ অঞ্চলে কিছু প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে।

Adampur Forest

১৭/ আদমপুর বনঃ

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান আদমপুর বন সিলেট বন বিভাগের অধীন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এ বনেরই একটি বিটের নাম আদমপুর। সীমান্ত ঘেঁষা এ জঙ্গলের পরেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। এই বনটি আয়তনে ১৩ হাজার ৮০ একর, বনটি চলে গেছে একেবারে ভারত সিমান্ত পর্যন্ত। আদমপুর বন বেশ নির্জন। মানুষের আনাগোনাও খুবই কম।

বনের পাশেই আছে খাসিয়াপুঞ্জি। এখানকার মানুষেরা দৈনন্দিন কাজে বনে যায়। জঙ্গল ভ্রমণের ফাঁকে ঢুঁ মারতে পারেন এই জায়গায়। এছাড়া আদমপুর বনের আগে সড়কের দুইপাশে আছে অনেক আগর বাগান। বেশিরভাগই উঁচুনিচু টিলা জুড়ে আদমপুরের জঙ্গল। বড় বড় গাছের নিচ দিয়ে চলে গেছে হাঁটাপথ।

কোথাও কোথাও দুই টিলার মাঝখান থেকেই চলে গেছে পথ। চলতে চলতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বানর। আরও আছে মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, উল্লুক, মেছো বাঘ, মায়া হরিণ ইত্যাদি।

কিভাবে আদমপুর বন যাওয়া যায়?

প্রথমে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল কিংবা কমলগঞ্জ। কমলগঞ্জ থেকে দশ কিলোমিটার দূরে এই বনের অবস্থান। প্রথমে আপনাকে কাউয়ার গলা বিট অফিসে যেতে হবে। নিজস্ব বাহন নিয়ে গেলে জঙ্গলের একেবারে মুখে যাওয়া যাবে। শুকনা মৌসুমে গাড়ি নিয়ে বনের বাংলোর সামনে যাওয়া যায়।

Madhavpur-Lake

১৮/ মাধবপুর লেকঃ ( madhabpur lake )

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান মাধবপুর লেক এবং চা বাগান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। দর্শনীয় মাধবপুর লেক বয়ে গিয়েছে ছোট পাহাড় ও টিলার মধ্য দিয়ে। লেকের চারপাশের বেশীরভাগ পাহাড় ও টিলায় চা চাষ করা হয়।

এই লেকের পানি সবসময় ছেয়ে থাকে নীল ও সাদা রঙের পদ্ম ফুলে। লেকটি এতটাই চওড়া যে ক্যামেরায় পুরো লেকটিকে ধারন করা প্রায় অসম্ভব। লেকের ওপর দিয়ে প্রায় সবসময় বাতাস বয়ে চলায় লেকটিকে একটি নদী অথবা শান্ত সাগরের মত দেখায়। এই লেকের নীল ও সাদা পদ্ম ফুলগুলো বহুদূর থেকে এতটাই জ্বলজ্বল করে যেন মনে হয় পদ্মফুলগুলোর ওপর কেউ নিপুণ হাতে শিল্পকর্ম করেছে।

কিভাবে মাধবপুর লেক যাওয়া যায়?

এই লেকটির দূরত্ব ঢাকা থেকে প্রায় ২০৭ কিলোমিটার এবং মৌলভীবাজার থেকে প্রায় ৩৯.৩ কিলোমিটার। শ্রীমঙ্গলে পৌঁছে আপনি শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়ক ধরে এই লেকে পৌছাতে পারেন।

1655016864339

১৯/ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানঃ ( lawachara )

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানটি উত্তরপূর্ব বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল থেকে এই স্থানটির দূরত্ব ৯.৪ কিলোমিটার। ঘন সবুজ জঙ্গলে পরিপূর্ণ ১২.৫ কিলোমিটার আয়তনের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি পশ্চিম ভানুগাছ রিজার্ভ ফরেস্টের অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই রেইন ফরেস্টে রয়েছে প্রায় ৪৬০ প্রজাতির জীব বৈচিত্র্য যেসবের মধ্যে রয়েছে ১৬৭ প্রজাতির গাছ, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণী, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ২৪৬ প্রজাতির পাখি। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী আইনের অধীনে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ সালের ৭ই জুলাই এই উদ্যানটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে।

কিভাবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে শ্রীমঙ্গল পৌছাতে হবে। শ্রীমঙ্গল থেকে আপনি ভানুগাছ সড়ক ধরে এখানে আসতে পারবেন।

২০/ মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জিঃ

মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের আওতাধীন হাইড্রকার্বনের মজুদ সমৃদ্ধ একটি জনপদের নাম মাগুরছড়া। এখানকার পরিত্যাক্ত গ্যাস ক্ষেত্রের পাশেই রয়েছে মাগুরছড়াপুঞ্জি নামের একটি গ্রাম। যেখানে আদিবাসী খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন বাস করে।

খাসিয়ারা তাদের বাড়ি পাহাড়ের উপর বিশেষভাবে তৈরি করে। খাসিয়া সমাজে কয়েকজন মন্ত্রী গোত্র প্রধান হিসেবে কাজ করেন যাদের অনুমতি নিয়ে আপনাকে এই পুঞ্জিতে ঢুকতে হবে। এই পুঞ্জিতে গেলে আপনি দেখতে পারবেন বড় গাছগুলোকে মূল ভিত্তি করে কিভাবে মাইলের পর মাইল এলাকায় পান চাষ করা হয়েছে।

কিভাবে মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জি যাওয়া যায়?

প্রথমে আপনাকে শ্রীমঙ্গল আসতে হবে, শ্রীমঙ্গলে পৌঁছে আপনি শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়ক দিয়ে ১০১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খাসিয়াপুঞ্জিতে পৌঁছে যাবেন।

Tanguer-haur

২১/ টাঙ্গুয়ার হাওরঃ ( tanguar haor )

টাঙ্গুয়ার হাওর (Tanguar Haor) সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। জলাবন, নীল আকাশ, পাহাড় ও চোখ জুড়ানো সবুজ এই হাওরকে অপরুপ সাজে সাজিয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ৬৯১২ একর।

তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০,০০০ একর পর্যন্ত হয়ে থাকে। শীতকালে এই হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে। টাঙ্গুয়ার হাওড় থেকে ভারতের মেঘালয়ের পাহারগুলো দেখা যায়। মেঘালয় থেকে প্রায় ৩০টি ছোট বড় ঝর্ণা বা ছড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে এসে মিশেছে।

টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়ার উপযুক্ত সময়ঃ বর্ষাকাল টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তবে পাখি দেখতে চাইলে শীতকালেই যেতে হবে আপনাকে।

টাঙ্গুয়ার হাওর কিভাবে যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে আপনাকে সবার আগে সুনামগঞ্জ যেতে হবে। সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর উপর নির্মিত বড় ব্রীজের কাছ থেকে বাইক করে তাহিরপুরে যেতে হবে। তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে।

nilandri-lek

২২/ নীলাদ্রি লেকঃ ( niladri lake )

নীলাদ্রি লেক পর্যটন স্থানটি চুনা পাথরের পরিত্যাক্ত খনির লাইম স্টোন লেক। সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টেকেরঘাট (Tekerghat) নামক গ্রামে নীলাদ্রি লেকের অবস্থান। লেকের চমৎকার নীল পানি, ছোট বড় টিলা আর পাহাড়ের সমন্বয় নীলাদ্রি লেককে করেছে অপার্থিব সৌন্দর্য্যের অধিকারী।

The magic river

২৩/ যাদুকাটা নদীঃ ( jadukata river )

যাদুকাটা নদী বা জাদুকাটা নদী সুনামগঞ্জ জেলায় বাংলাদেশ ভারতের উত্তর পূর্ব সীমান্তের কোল ঘেসে বয়ে চলেছে। রেণুকা হচ্ছে যাদুকাটা নদীর আদি নাম। মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় হতে বয়ে চলে যাদুকাটা নদীটি প্রায় বিশ মাইল পর্যন্ত গিয়ে সুরমা নদীতে এসে মিলিত হয়েছে।

নদীর এক পাড়ে দেখা যায় সবুজ বৃক্ষরাজিময় বারেক টিলা ও অন্য দিকে খাসিয়া পাহাড়। যাদুকাটা নদীতে চোখে পড়ে স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মতৎপরতা। শ্রমিকেরা প্রতিদিন ভোর হতে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদী থেকে পাথর, কয়লা ও বালি আহরণ করে।

কিভাবে জাদুকাটা নদী যাওয়া যায়?

যাদুকাটা নদী দেখতে হলে আপনাকে সবার প্রথমে যেতে হবে সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জ থেকে লাউড়ের গেলেই দেখা পাবেন জাদুকাটা নদীর।

Shimul-Bagan

২৪/ শিমুল বাগানঃ ( shimul bagan sunamganj )

শিমুল বাগান (Shimul Bagan) সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘারও বেশি জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা এক শিমুল গাছের বাগান। শিমুল গাছের পাশাপাশি এই বাগানে অনেক লেবু গাছও রয়েছে। বসন্তকালে সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান  শিমুল বাগানের দিকে তাকালে গাছের ডালে ডালে লেগে থাকা লাল আগুনের ঝলখানি চোখে এসে লাগে।এক দিকে মেঘালয়ের পাহাড় সারির অকৃত্রিম সৌন্দর্য্য অন্য দিকে রূপবতী যাদুকাটা নদীর তীরের শিমুল বাগানের তিন হাজার গাছে লাল ফুলের সমাহার।

যাবার উপযুক্ত সময়ঃ শিমুলের ডালে শিমুল দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই ফাল্গুন মাসের শুরুর দিকে যেতে হবে।

কিভাবে শিমুল বাগান যাওয়া যায়?

শিমুল বাগান দেখতে চাইলে প্রথমে সুনামগঞ্জ আসতে হবে। সুনামগঞ্জ থেকে আসতে হবে বারিক্কা টিলা। সেখানে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে আপনাকে শিমুল বাগানের রাস্তা দেখিয়ে দিবে।

barek-tila

২৫/ বারেক টিলাঃ ( barek tila )

বারেক টিলা সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত।টিলার উপর থেকে মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় দেখা যায়। বারিক্কা টিলায় প্রায় ৪০ টি আদিবাসী পরিবার বাস করে। সবুজে পরিপূর্ণ টিলার মধ্য দিয়ে টেকেরঘাট যাবার রাস্তা নির্মিত হয়েছে। বারেক টিলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে আসা যাদুকাটা নদী।

কিভাবে বারেক টিলা যাওয়া যায়?

বারিক্কা টিলা বা বারেক টিলা দেখতে চাইলে প্রথমে সুনামগঞ্জ আসতে হবে। সুনামগঞ্জ থেকে

 মোটরসাইকেল করে সরাসরি বারিক্কা টিলায় আসতে পারবেন।

Lalghat-Jharna

২৬/ লালঘাট ঝর্ণাঃ

সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুর উপজেলা সংলগ্ন ভারত-বাংলাদেশ জিরো পয়েন্টের কাছে লালঘাট ঝর্ণা অবস্থিত। ঝর্ণার পূর্ব দিকে হাজং সম্প্রদায়ের ছোট ছোট পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে সবুজের গ্রাম নামের আদিবাসী পল্লী।

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান লালঘাট আদিবাসী পল্লী হলেও এখানে প্রায় দেড় শতাধিক স্থানীয় বাঙ্গালী পরিবার রয়েছে। গ্রামের বসতির চারপাশে আছে পাহাড়ি বনজ, ফলজ ও বিভিন্ন প্রকার ফুলের গাছ। লালঘাট গ্রামের একপাশে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সীমানায় থাকা চুনা পাথরের পাহাড়, ভারতীয় লাল ঘাট ও বিএসএফ জোয়ানদের ক্যাম্প দেখা যায়।

Satchari National Park

২৭/ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানঃ ( satchari national park )

প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত সাতটি পাহাড়ি ছড়া বা ঝর্ণা থেকে এই স্থানের নামকরণ করা হয় সাতছড়ি। সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান  সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৪৫ প্রজাতির নানা জাতের গাছপালা আছে। প্রাণীর মধ্যে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলে মেছোবাঘ, উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান, শুকুর, লজ্জাবতী বানর, চশমা হনুমান এবং নানা প্রজাতির সাপ।

কিভাবে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান যাওয়া যায়ঃ ঢাকা থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে যেতে চাইলে সিলেট রোড ধরে মাধবপুরের পর তেলিয়াপাড়া বিশ্বরোড মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে গিয়ে সরাসরি সাতছড়ি যেতে পারবেন।

সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান এর কোন কমতি নেই। আমরা যারা অল্প সময়ের জন্য ভ্রমণ করতে বের হয় তাদের জন্য সিলেট বেশ উপযোগী। ছুটিতে আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন সিলেট থেকে। হেলমেট ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রিত গতিতে বাইক রাইড করুন।

ধন্যবাদ।

তথ্য সূত্রঃ ১- বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন ২- ভ্রমণ গাইড

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল