সিলেট ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৫
কমিশনার থেকে মেয়র,এবার পেলেন এমপির টিকেট তিনি হলেন আম-জনতার আরিফ!
নাজমুল কবীর পাভেল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজ বাসায় তলব করে মনোনয়ন দিয়েছেন সিলেটের বহুল আলোচিত বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভার্চুয়ালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতিতে আরিফুল হককে সিলেট-৪ আসনে দল মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
আরিফুল ওই আসনের মনোনয়ন নিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন। তিনি এতদিন সিলেট-১ আসনের মনোনয়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিএনপি সিলেট-১ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদিরকে মনোনয়ন দেয়। এরপর আরিফকে তলব করে বিএনপির হাই কমান্ড।
সূত্র জানায়, আরিফুল হক চৌধুরী ১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেটের কুমারপাড়ায় চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ শফিকুল হক চৌধুরী এবং মাতা আমিনা বেগম। তিনি ছোটবেলা থেকেই সিলেট শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পারিবারিক প্রথা ও রাজনৈতিক পরিবেশ তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে ওঠে।
তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় স্থানীয় পর্যায়ে। তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে উন্নয়ন কমিটির প্রধান হন। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর তিনি যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একই বছরের ১৯ জুন আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় এবং ৯ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ২০০৮ সালে চৌধুরী ও তার স্ত্রী শামা হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হলে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে চৌধুরী দুর্নীতির মামলায় খালাস পান।
২০১৩ সালের জুনে তিনি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে তিনি ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। মেয়র হিসেবে তার প্রশাসনিক কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাইফুর রহমান শিশু পার্ক এবং অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রকল্পের উন্নয়ন প্রচেষ্টা।
২০১৪ সালে তাকে শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিভিন্ন আদেশের মাধ্যমে তিনি আবার দায়িত্বে ফিরে আসেন।
২০১৮ সালে চৌধুরী পুনর্নির্বাচনে জয়লাভ করেন, যেখানে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে ৬,১৯৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
মেয়র হিসেবে তার কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নগরীর সড়ক ও জলবায়ু অবকাঠামো উন্নয়ন, পানির সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন, এবং বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রকল্প বাস্তবায়ন। তিনি স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে সমন্বয় করে সিলেটের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের চেষ্টা চালান।
ব্যক্তিগত জীবনে তার পরিবারে স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সক্রিয় সদস্য এবং দলের জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
আরিফুল হক চৌধুরী জানান, দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশ আমি কখনোই অমান্য করিনি, করবো-ও না। তাই সিলেট-৪ আসনেই নির্বাচন করবো, সব আল্লাহর ইচ্ছা। তিনি বলেন, চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরুব্বী। অতীতেও দলের প্রয়োজনে আমি বারবার নির্দেশ পালন করে আসছি। সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছি।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) কেন্দ্রের জরুরি তলবে ঢাকায় যান আরিফুল। সেখানে তাকে নিয়ে একাধিক দফায় বৈঠক হয়। সবশেষ বুধবার রাত ৯টায় বিএনপি চেয়ারপারসন তাকে ডেকে পাঠান এবং এ সিদ্ধান্ত দেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
(পরিচালক)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি