সাকিব আল হাসান বনাম ভারত

প্রকাশিত: ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২, ২০১৯

সাকিব আল হাসান বনাম ভারত
২০০৭ এর পোর্ট অব স্পেনের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ দিয়ে শুরু যে লড়াইয়ের, আজ সময়ের সঙ্গে তা পরিণত হয়েছে ক্রিকেট দুনিয়ার রোমাঞ্চকর এক দ্বৈরথে। ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ মানেই এখন টানটান উত্তেজনা। প্রতিনিয়ত যা’তে ঘি ঢেলে যাচ্ছেন দু দেশের সমর্থকরা। তবে, ক্রিকেট মাঠে লড়াইটা হবে ব্যাটে-বলে। আর সেখানে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারফর্ম করবেন ক্রিকেটাররা।
ভারত-বাংলাদেশ, ওয়ানডে ম্যাচের ইতিহাস টানলে পরিসংখ্যানের খেরোখাতায় অনেক পেছনে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ২ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতের সামনে ধারে এবং ভারে পিছিয়ে টাইগার শিবির।
তবে ২০০৭ পোর্ট অব স্পেনের সেই অবিশ্বাস্য ফলাফলটাই বদলে দিয়েছে এ দুটি দলের ম্যাচের মাহাত্ম। তাই আরো একবার যখন মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ তখন অবধারিতভাবেই সামনে আসছে দুই দলের তুরুপের তাসদের নাম।
বাংলাদেশের হিসেব কষতে বসলে প্রথম যে নামটা সামনে আসবে, তিনি ওডিআই ক্রিকেটে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার, সাকিব আল হাসান। ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত খেলা ১৭ ম্যাচে ৩৫ গড়ে ৫২৫ রান। ৭ ফিফটি থাকলেও, টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে এখনো সেঞ্চুরির দেখা পান নি সাকিব। সর্বোচ্চ স্কোর ৮৫। যদিও, এ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান ছুটছেন পাগলা ঘোড়ার মতো। ৭ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি আর ৪ ফিফটিও ঝুলিতে ভরেছেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইভ। আর উইকেট নিয়েছেন ১০টি। ভারতের বিপক্ষে ১৭ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যাও ১৮।
২০০৭ এ ভারতকে বিশ্বকাপ ছিটকে দেয়ার সেই চূড়ান্ত শটটি খেলেছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে ডিপেন্ডেবল ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এ বিশ্বকাপেও যার ব্যাট কথা বলছে সমান তালে। ইতোমধ্যে এক সেঞ্চুরিসহ ২টি ফিফটি করেছেন মুশি। আর ভারত সামনে আসলেই, মুখের হাসি আরো চওড়া হয়ে যায় মুশফিকুর রহিমের। আগে খেলা ২১ ম্যাচে ৩৫ অ্যাভারেজে ৬০৪ রান করেছেন তিনি। একটি সেঞ্চুরিসহ ৩টি ফিফটির ইনিংসও আছে যেখানে।
বোলিংয়ে এখনো ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম মুস্তাফিজুর রহমান। অভিষেকের পরপর ঘরের মাঠে এ ভারতকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছিলেন ফিজ। যদিও, পরে সময়ের সঙ্গে নিজের অস্ত্রটাকে আর সেভাবে শান দিতে পারেন নি তিনি। তবে প্রতিপক্ষ যখন ভারত, তখন আরো একবার আশার বেলুন ফোলাতে দোষ কই? এ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৬ ম্যাচে ৫ দশমিক তিন ছয় ইকোনোমিতে ১৫ উইকেট আছে তার দখলে।
এবার আসা যাক তাদের কথায়, যারা বাংলাদেশ বধে হতে পারে ভারতের মূল প্রভাবক।
প্রথম নামটা অবশ্যই রোহিত শর্মার। ২০১৫’র কোয়ার্টার ফাইনাল, কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল- বাংলাদেশকে পেলেই যে ব্যাটটাকে তলোয়ারের মতো ব্যবহার করেন এ ভারতীয়। তাই তো টাইগারদের বিপক্ষে রোহিতের গড় ৫০ এর ওপরে। সর্বোচ্চ ইনিংস ১৩৭। এছাড়া, আরো একটা সেঞ্চুরি আছে তার দখলে। তার ওপরে বিশ্বকাপটাও দারুণ যাচ্ছে এ ওপেনারের। ইতোমধ্যেই দুটি সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন তিনি।
যার নাম না বললেই নয়, তিনি বিরাট কোহলি। তর্কাতীতভাবে এ মুহূর্তের বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের বিপক্ষে তার রেকর্ডটাও ঈর্ষণীয়। ৮১ গড়ে, ৯০ স্ট্রাইক রেটে ১১ ম্যাচে তার রান ৬৫৪। ৩ ফিফটির সঙ্গে যেখানে রয়েছে ৩টি শতক।
আর বোলিংয়ে ভারতের এখন সবচেয়ে বড় স্বস্তির জায়গা জাস্প্রিত বুমরাহ। শামি-ভুবিরা উইকেট এনে দিলেও, টিম ইন্ডিয়ার ফেভারিট লিস্টে সবচেয়ে ওপরের নামটা বুমরাহরই। কারণ তার ইকোনোমিকাল বোলিং। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে মাত্র ৬ উইকেট নিলেও, ওভার প্রতি রান দিয়েছেন সাড়ে চারেরও কম।
এগুলো সবই পরিসংখ্যান আর অতীত ইতিহাসের ছিন্নপত্র। মাঠের খেলায় যা খুব বেশি প্রভাব ফেলে না কখনই। এখন দেখার বিষয় মাঠের খেলায় এজবাস্টনে কারা ভুল প্রমাণ করে ইতিহাসকে।
স্পোর্টস ডেস্ক

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল