যদি জানতাম ‘ঢেলে দেই’ নিয়ে ট্রল হবে তাহলে বলতাম না : গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরী

প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯

যদি জানতাম ‘ঢেলে দেই’ নিয়ে ট্রল হবে তাহলে বলতাম না : গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরী

খাবেন? ঢেলে দেই?’, ‘পরিবেশটা সুন্দর না?’, ‘কোনো হইচই আছে?’, ‘আমি কি কাউকে গালি দিয়েছি?’, ‘বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাতা’-এ বাক্যগুলো এখন ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল।

মূলত এ বাক্যগুলো মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরী নামের একজন বক্তার। একটি ওয়াজে নানা অঙ্গ-ভঙ্গিতে বাক্যগুলো উচ্চারণ করেছিলেন তিনি। যার ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এ ভিডিও নিয়ে অনেকেই হাসি-তামাশায় মেতেছেন।

মূলত গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরীর একটি ওয়াজে দেখা গেছে, হাতে একটি চায়ের কাপ নিয়ে তাতে চুমুক দেন। এরপর বলেন, ‘কেউ কথা কইয়েন না, একটু চা খাব? খাই একটু? আপনারা খাবেন? ঢেলে দেই? (মুচকি হেসে আবারও) ঢেলে দেই?

বক্তব্যের মধ্যে অশ্লীল ভঙ্গিও করেন তিনি। সেই সঙ্গে নাচ-গানসহ আরও বিনোদনমূলক কথাবার্তা। ওয়াজের সময় এভাবে বিনোদন দিয়ে বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে তাহেরী।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তাহেরী বললেন ভিন্ন কথা। বলেন, ‘হিংসা-প্রতিহিংসা থেকে অনেকে আমার বক্তব্য কাট করে ট্রল করছে’।

গণমাধ্যমকে তাহেরী বলেন, ‘দুই ঘণ্টার বেশি সময় আমি ওয়াজ-নসিয়ত করে থাকি। এর ভেতরে দুই একটি কথা হয়তো আমি মজা করে বলি কিংবা স্লিপ অব টাং হতে পারে। পরিস্থিতি এবং উপস্থিতির কারণে আমি বলতে পারি তাই বলে এটা নিয়ে ট্রল করে প্রচার করা খুবই দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমি যদি কোনো একটি কথা ভুল করে বলে থাকি সেটা আমাকে ভালোভাবে বলা যায়। আমি শুধরে নিতে পারি। কিন্তু এভাবে আমার কথা থেকে কেটে এভাবে ট্রল করা কোনোভাবেই ভালো না।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় আমার কাছের লোকজন বলে, বক্তব্যে ভেতরে এটা বলার কী দরকার? তখন আমি তাদের বলি এটা হয়তো ভুল করে বা পরিস্থিতি ট্যাকেল দিতে গিয়ে হয়ে যায়। তখন তারা আর কিছু বলে না।’

তাহেরী আরো বলেন, ‘তবে আমি যদি জানতাম আমার এসব কথা নিয়ে ট্রল হবে তাহলে আমি বলতাম না। মানুষ তো ভুল করেই। তবে ভুল করা মানুষকে নিয়ে খারাপ ভাবে না বলে শুধরে নিতে বলা উচিত।’

ওয়াজে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরদারির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার-আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে কাউকে নজরদারিতে রাখতে পারে। এতে আমি বিচলিত নই। যদি মনে হয় আমার বক্তব্য উসকানিমূলক তাহলে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চাপুইর গ্রামে। তার দাদা মৌলবি ফঈজ উদ্দিন ছিলেন পীর। তাহেরী দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, তাহেরীর মোট ৪ ভাই ও ৪ বোন রয়েছে। ভাইদের মধ্যে তার অবস্থান তৃতীয়। বিবাহিত তাহেরীর বয়স প্রায় ৩৬ বছর।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, তাহেরী দেশের বিভিন্নস্থানে ওয়াজ মাহফিল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ১০ থেকে ১২ দিন পরপর এলাকায় যান। স্থানীয় ফয়েজীয়া দরবার শরীফের পীর বলেও নিজেকে দাবি করেন তাহেরী।

এ বিষয়ে মাছিহাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল আমিন বিডি২৪লাইভকে বলেন, ওয়াজ নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকেন তাহেরী। বাড়িতে তেমন আসেন না। আসলেও বেশি থাকেন না। তবে এলাকার মানুষের সাথে তিনি ভালোই ব্যবহার করেন।

তিনি বলেন, তাহেরীর দাদা পীর থাকলেও তার বাবা পীর ছিলেন না। তবে তাহেরী নিজেকে পীর বলে দাবি করেন।

চেয়ারম্যান বলেন, তার অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এগুলো আমি নিজেও দেখেছি। তবে এভাবে ওয়াজ করা তো ঠিক নয়। আমরা চাই এভাবে ওয়াজ না করে ভালভাবে ওয়াজ করুক। তাহলে আমাদের এলাকার মান-সম্মান থাকবে।

এর আগে ‘বসেন, বসেন, বসে যান’ বাক্য সম্বলিত তাহেরীর আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এই ভিডিওতেও নানা অঙ্গ-ভঙ্গিতে দেখা যায় তাহেরীকে। যা ছিল দৃষ্টিকটু।

সিলেটের দিনকাল ডেস্ক

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেসবুকে সিলেটের দিনকাল