১৯শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে নারী ধর্ষণ, ঘরবাড়ি পুড়ানো, লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে রাজাকার কামান্ডার বেবুলের বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও সেই পুরানো চরিত্রে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই রাজাকারের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে হাওর খেঁকো শব্দটিও। যার কারণে হাকালুকি অভয়াশ্রম রক্ষা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তার দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির ঘনিষ্টজন পরিচয়ে বিভিন্ন অফিস আদালতে সে দাপিয়ে বেড়ায় এবং নানা অনৈতিক ফায়দা হাসিল করে বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
যুদ্ধাপরাধী রাজাকার থেকে হাওর খেকো সেই ব্যক্তির নাম হাছান আলী বেবুল (৮৫)। বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মহদিকোনা গ্রামের মৃত জফর আলীর পুত্র। নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে তিনি এখন আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করেন।
রাজাকার কামান্ডার হাছান আলী বেবুলের বিরুদ্ধে এলাকার হবিব আলী, মুহিবুর রহমান, সফিক উদ্দিন, আজির উদ্দিন, ময়না মিয়া, মানিক মিয়া, হারিছ আলীসহ ৪৮ জন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপির কাছে। যার অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারের কাছে দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী তাদের লিখিত অভিযোগে জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তযুদ্ধকালিন সময়ে পাকিস্তাানী বাহিনীর সাথে তার নারকীয় তান্ডব স্মরণ হলে এলাকাবাসী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আজও গা শিউরে উঠে। পাকিস্তানী বাহিনী বড়লেখায় এসে রাজাকার গঠন করার পর উক্ত হাছান আলী বেবুল কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
যুদ্ধাকলীন সময়ে হাছান আলী বেবুল বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজার হতে পশ্চিম দিকে হরিনবদি গ্রামের দিকে পাক বাহিনী নিয়ে রওয়ানা দেয়। সে গ্রামে ঢুকে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। মালামাল লুন্ঠন ও মা-বোনের ইজ্জত হরণের লিপ্ত হয়। হিন্দু যুবতি মহিলাদের ধরে নিয়ে যায়। অন্যদের বাড়ি থেকে বিতাড়ন করে। গ্রামকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। এরপর সে তার আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে গুলি করে। কিন্তু অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান।
গ্রামের মিলন বাবু ও মন্টু বাবুর ২টি হালের বলদ তারা ভারত যাওয়ার আগে আমরুজ আলীর ছেলের কাছে রেখে যায়। কিন্তু ওই হাছান আলী বেবুল রাজাকার আমরুজের কাছ থেকে বলদগুলো ধরে নিয়ে জবাই করে মাংস পাকিস্তানী ক্যাম্পে নিয়ে যায়। মনি চন্দ্রকে হাত পা বেধে মেয়ের উজ্জত লুট করে এবং তার ২টি হালের বলদ নিয়ে যায়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজ উদ্দিনের কাছে অস্ত্র জমা দিয়া রাজাকার হাছান আলী আত্মসমর্পন করে।
এলাকাবাসীর দাবি রাষ্ট্রদ্রোহী রাজাকারদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করলে আজও ওই রাজাকারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তারা এই রাজাকারের বিচার দাবি করেন।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হারিছ আলী জানান, ঘটনা তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে হাছান আলী বেবুলের অপকর্মের সকল কাহিনী। মুক্তিযোদ্ধা অনুকুল দে জানান, যারা অভিযোগ করেছে অভিযোগ সঠিক। এলাকার মানুষ বিষয়টি প্রমাণ করবে।
বড়লেখা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার সিরাজ উদ্দিন জানান, হাছান আলী বেবুল একজন রাজাকার ছিলেন এটি সঠিক। তবে জ্বালাও পুড়াও তেমন একটা করেছে বলে জানা নেই। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, অভিযোগকারীরা সরাসরি মামলা করতে পারতেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে হাছান আলী বেবুল মোবাইল ফোনে জানান, তিনি ঢাকায় আছেন। এলাকায় এলে বিস্তারিত বলবেন। আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির সদস্য তিনি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা ঘটনা বলে তিনি দাবি করেন।
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D