সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
সিলেটের দিনকাল ডেস্ক:
দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির অধ্যয় আজ গৌরবমুখর। দেশে চায়ের ইতিহাস ভরে উঠেছে দারুণ সফলতায়। চলতি বছর চা উৎপাদনে সর্বকালের রেকর্ড করতে চলেছে বাংলাদেশ। চা-শ্রমিক, সর্দার, চা-করণিক, বাগান ব্যবস্থাপক, চা-বাগানের সত্ত্বাধিকারী, চা-বাগান পরিচালনামূলক নানান প্রতিষ্ঠানের চা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারদের মুখে আজ সার্থকতার হাসি।
চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের চা-শিল্পের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে চলতি চা উৎপাদন মৌসুমে (২০১৯) অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়তে চলেছে বাংলাদেশ চা-শিল্প। চলতি বছরের নভেম্বরেই রেকর্ডের প্রায় ৯৫ ভাগ চা উৎপাদিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক চলতি বছর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ মিলিয়ন কেজি, অর্থাৎ আট কোটি কেজি।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের (পিডিইউ) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক বলেন, আবারও চা উৎপাদনে নতুন করে রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোট উৎপাদন ৮৯ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন কেজি। গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের নভেম্বরে ৭৫ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন কেজি হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এ বছর একই সময়ে ১৩ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদিত হয়েছে। চা-বাগানগুলোতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত, অনুকূল আবহাওয়া, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পোকামাকড়ের আক্রমণ না হওয়া, খরার কবলে না পড়াসহ সর্বোপরি বাংলাদেশ চা বোর্ডের নজরদারিই এর কারণ বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে চা উৎপাদিত হয়েছে ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি। যা দেশের চা উৎপাদন মৌসুমের (২০১৮) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড। ২০১৮ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ দশমিক ৩ মিলিয়ন কেজি। এর আগে ২০১৬ সালে সব রেকর্ড ভেঙে ১৬২ বছরের চা-শিল্পের ইতিহাসে দেশের সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৮৫ দশমিক ০৫ মিলিয়ন কেজি।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মুনির আহমদ বলেন, আমরা আশা করছি, এবার ডিসেম্বর পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৯৫ মিলিয়ন কেজির উপরে। অর্থাৎ ৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি ছাড়িয়ে যাবে। এটিই চায়ের ইতিহাসে দেশে সর্বকালের সেরা রেকর্ড।
তিনি বলেন, এ সাফল্যের পেছনে সরকারের নানামুখী দিকনির্দেশনাগুলো দারুণ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। ভর্তুকিমূল্যে সার ঠিকঠাক মতো যথাসময়ে পৌঁছাতে পেরেছে, বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সুপারভিশন (তদারকি) শক্ত হাতে করেছে, কোনো ফ্যাক্টরি থেকে চা যাতে লিকেজ হতে না পারে এবং চা নিলামের বাইরে যাতে বেআইনিভাবে কোথাও বিক্রি না হয়, এগুলোর বিষয়ে কড়া নজরদারি গ্রহণ করা হয়েছিল।
এমন সাফল্যে নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে বিটিবি’র এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চা-বাগানগুলোতে নজরদারি অনেক বাড়িয়েছি। আমাদের ইজারার শর্ত না মানলে আমরা বাগানগুলোকে জরিমানা করছি। আগে চা বাগানের কোনো কোনো ম্যানেজার ভাবতেন যে, তারা জমিদারি নিয়ে নিয়েছেন। এটার মালিক তারা, শ্রমিকদের মালিক তারা। এই মনোভাব থেকে তাদের বের করে এনেছি। জমির মালিক সরকার এবং জনগণ। সরকার এ বাগানের জমিগুলো ইজারা দিয়েছে কিছু শর্তের ভিত্তিতে। এই শর্তগুলোই বাগানগুলোতে মানাতে আমরা বাধ্য করিয়েছি।
‘বৃটিশ আমলের ধ্যানধারণা তাদের (চা-বাগান কর্তৃপক্ষকে) আজ পরিত্যাগ করতে হবে। শ্রমিক তাদের দাস নয় এবং তিনিও বাগানের রাজা নয়। কেউ যা খুশি তাই করতে পারবে না। যেই আইনের ভিত্তিতে চা-বাগানগুলো ভূমি লিজ নিয়েছে, সেই আইনগুলো যাতে পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেগুলোই আমরা দেখছি। আর এই সব বিষয়গুলোই চায়ের আজকের সাফল্য।’
‘বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১’র সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চা-শিল্পের উন্নয়নে ‘উন্নয়নের পথ নকশা: বাংলাদেশ চা-শিল্প’ নামে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমান সরকার এর মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন কেজিতে উন্নীত করতে কাজ করছে,’ বলেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মুনির আহমদ।
সুবেদ-২২/১২/১৯
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
(পরিচালক)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি