১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯
আহমদ মারুফ:
সিলেটকে বলা হয় দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী। এখানে রয়েছে হাজার বছরের লালিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। মাঝে মধ্যে এ সম্প্রীতিতে যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেনি স্বার্থান্বেষী মহল তা নয়। দরগায় বোমা হামলা, বিষ প্রয়োগে দরগা পুকুরের গজার মাছ হত্যা সবকিছুর পিছনেই একটি মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে সচেতন মহলের ধারণা। এতকিছুর পরও যে ওই মহলটি সফল হয়েছে তা বলা যাবে না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই ঘৃণা ছুড়েছে ওই সকল বর্বোরোচিত ঘটনার নেপথ্যের কলাকুশলীদের।
সিলেটের মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন থাকা সত্ত্বেও ঠেকানো যায়নি নগরীর সুরমা মার্কেটের পার্শ্ববর্তী খৃষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় গির্জা ও বাইবেল পাঠাগারটি। তথ্য গোপন করে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ওই জায়গাটি। গির্জা ও পাঠাগার ভেঙ্গে ফেলে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বিলাস বহুল মার্কেট ও ফ্ল্যাট বাড়ি। গির্জা ভেঙ্গে ফেলার ঘটনায় যে শুধু খৃষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যথিত হয়েছিলেন তা নয়। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান সকল সম্প্রদায়ের লোকজনই সে সময় নিন্দা জানিয়েছিলেন এমন ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের।
সিলেটের ইতিহাসে ধর্মীয় উপাসনালয় ভেঙ্গে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তৈরির এটাই প্রথম ঘটনা বলে মত প্রকাশ করেছিলেন তারা। সচেতন মহল এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন প্রশাসনের। দলীয় সরকারের প্রভাবে তাদের সে দাবি আলোর মুখ দেখেনি। ধর্মীয় উপাসনালয়ের জায়গায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়। অথচ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার যে পাওয়ার অব এ্যাটর্ণি বলে ওই জায়গা খৃষ্টান সম্প্রদায়কে দান করেছিল তাতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে গির্জা ও পাঠাগারের জায়গা কোনো অবস্থাতে লিজ বা বিক্রি করা যাবে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার কসবে সিলেট মৌজার ১৮৭৮ খতিয়ানের ৬০০৬ নং দাগে ১.১০ একর জায়গা পাওয়ার অব এ্যাটর্নির মাধ্যমে দান করে তৎকালীন ইস্ট বেঙ্গল ডায়সিসান ট্রাস্ট এসোসিয়েশনকে। পাওয়ার এ্যাটর্ণিতে উল্লেখ করা হয় দানকৃত জায়গার মধ্যে ৪০ ডেসিমেল জায়গা ধর্মীয় উপাসনালয় গির্জা ও খৃষ্টান সম্প্রদায়ের পড়ালেখার জন্য একটি করে (পরবর্তীতে বাইবেল পাঠাগার) জন্য বরাদ্দ। ওই জায়গা কোনো অবস্থাতে বিক্রয়, লিজ বা ভাড়া দেওয়া যাবে না।
গির্জা বা পাঠাগারের জায়গা ছাড়া বাকী জায়গা ট্রাস্ট তাদের তহবিল সমৃদ্ধকরণে বা গির্জা ও পাঠাগারের উন্নয়নে বিক্রয়, লিজ বা ভাড়া দিতে পারবে। ট্রাস্টের পক্ষে পাওয়ার অব এ্যাটর্ণিতে স্বাক্ষর করেন চেয়ারম্যান রেভা জেমস ডগলাস ব্লেয়ার। ১৯৬৯ সালে ওই ট্রাস্টের নাম পরিবর্তন করে ঢাকা ডায়সিসান ট্রাস্ট করা হয়। এ সময় তারা পাঠাগারটিতে স্থাপন করে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেন মহানগর শাখার অফিস। যার সভাপতি সাউথ সুরমা সিটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়নাল আবেদীন। মূলত এ অফিসের মাধ্যমেই নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে দখল টিকিয়ে রাখেন তারা।
পরবর্তীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা পুনরায় কাজ শুরু করেন ওই জায়গায়। তবে বেআইনিভাবে ক্রয়কৃত জায়গাটি বেশি দিন নিজেদের দখলে রাখতে পারবেন না নিশ্চিত হয়ে শেষ পর্যন্ত তারা জায়গাটি বিক্রি করে দেন। বতর্মানে সেখানে সুরমা টাওয়ার নামে একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মস্তাক আহমেদ পলাশ
নির্বাহী সম্পাদক : নাজমুল কবীর পাভেল
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ আম্বিয়া পাভেল
শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের কর্তৃক ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা (লিফটের-৮), জিন্দাবাজার, সিলেট থেকে প্রকাশিত। ( শ্রীহট্ট মিডিয়া লিমিটেডের দুইটি প্রতিষ্ঠান দৈনিক সিলেটের দিনকাল ও সিলনিউজবিডি ডট কম)
office: Anamika-34. Purbo Shahi Eidgah, Sylhet 3100.
ইমেইল : pavel.syl@gmail.com
ফেইসবুক পেইজ : Facebook
মোবাইল: +8801712540420
Design and developed by M-W-D