মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর ও চা বাগানে পর্যটকদের ভিড়

প্রকাশিত: ১০:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২০

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর ও চা বাগানে পর্যটকদের ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহত্তর হাওর হাকালুকির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঈদের দিন থেকে ছুটে আসছেন হাজার হাজার প্রকৃতি প্রেমি পর্যটক। বৃহত্তর সিলেটের গৃহবন্দি মানুষজন একটু হাফ ছাড়তে করোনার আতঙ্ককে দূরে ঠেলে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে শ^াস নিতে তাই আসছেন বর্ষায় নব যৌবনা হাকালুকির হাওরের মুগ্ধতা উপভোগ করতে। হাওরের নৈসর্গিক দৃশ্য যেন দর্শকদের চোখে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই হাকালুকি হাওরের বিশাল অংশই পড়েছে মৌলভীবাজার জেলার তিনটি উপজেলা কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ীতে।
হাওরে আসা পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে মানুষজন বন্দি জীবন যাপন করছেন। জেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে রেখেছে বন বিভাগ। তাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে মানুষের ঢল এখন হাকালুকি মুখী আবার কেউবা ছুটছেন রাস্তার পাশের সবুজের গালিচা বিছানো চা বাগানগুলোতে। ঈদুল আজহার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হওয়ার এই সুযোগ মেলায় হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন হাকালুকিতে। কেউ হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে সেল্ফি তুলে ও নির্মল বাতাস টেনে নিচ্ছেন বুক ভরে, আবার কেউ বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় পরিজন নিয়ে ইঞ্জিন নৌকায় চড়ে হাওরের বুকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
হাওর এলাকার বন বিভাগের পর্যটন টাওয়ার, বিট কর্মকর্তার অফিসের ছাদ এবং হাওর পাড়ের পাকা সড়কে ছিল পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের দিন থেকে শুক্রবার(৭ আগস্ট) পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ ছুটে গেছেন হাকালুকির নৈসর্গিক মুগ্ধতা দুচোখ ভরে দেখতে। হাওরের হিজল ও কড়চ গাছের থোকা থোকা মাথা(শীর্ষ ভাগ) হাওরের বিশাল জলরাশির মধ্যে দোলে দোলে পর্যটকদের যেন আমন্ত্রন জানাচ্ছে হাওর বিলাশের জন্য।
এবার পর্যটকের ভিড় বেশি ছিল কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের পালের মোড়া সেল্ফি ব্রিজ এলাকায়, ভুকশিমইল বাজার সংলগ্ন ব্রিজ এলাকায়, জুড়ীর কন্টিনালা ব্রিজ ও বড়লেখার তালিমপুর ইউনিয়নের হাল্লা এলাকায়। হাওরের দিগন্ত জোড়া বিশাল জলরাশি আর হালকা ঢেউে ফুরফুরে বাতাস পর্যটকদের মন জুড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, বিকেলের আকাশে নানান রং এর মেলা, জলে ফোটা লাল সাদা শাপলা ফুলের সমারোহ, আর থোকা থোকা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য হাওরে আসা লোকজনের মনকে চাঙ্গা করে দিয়েছে। সাথে রয়েছে শেষ বিকেলের সূর্যাস্ত, নানা ধরণের পাখির ঝাঁক উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য পর্যটকদের বাড়তি চাহিদাও পুরণ করে দিয়েছে। দিনশেষে ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষজন হাওরের এই রুপ দেখে মুগ্ধ হয়ে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান কাছের ও দূরের পর্যটকরা।